এখন ভাইরালের যুগ চলছে : পরশী

porshi-risngb-2205261050.jpg

দেশের তথ্য ডেস্কঃ

নতুন গান নিয়ে হাজির সাবরিনা পড়শী। ২৬ জুন ইউটিউবে ‘এই দুটি চোখে’ প্রকাশিত হওয়ার পর এরই মধ্যে মিলিয়ন ভিউ পেরিয়েছে গানটি। উঠে এসেছে ট্রেন্ডিংয়েও। এই গায়িকা-অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন কামরুল ইসলাম।

ভিউ খরার এই সময়ে আপনার নতুন গানটি দারুণ সাড়া পাচ্ছে। কেমন লাগছে?
অবশ্যই ভালো লাগছে। তবে গান ট্রেন্ডিংয়ে আসতে হবে, অনেক ভিউ হতে হবে—এসবে আমার মাথা ব্যথা বরাবরই কম। হ্যাঁ, শ্রোতাদের সাড়া পেলে ভালো লাগে।

সিনেমাটিক আবহে গানটির ভিডিও বানানো হয়েছে। নেপথ্যের গল্পটা বলবেন?
প্রায় চার বছর আগে গানটি গাওয়া। হুট করেই প্রকাশ করার পরিকল্পনা এবং ভিডিও বানানোর সিদ্ধান্ত হয়। এক দিনে শুটিংয়ের পরিকল্পনা ছিল, লেগেছে দুই দিন।

সেট সাজিয়ে ইনডোরে শুটিং করেছি। তবু ভিডিওটি দৃষ্টিনন্দন হয়েছে, এর কৃতিত্ব নির্মাতা ও কোরিওগ্রাফারের। কার কতটুকু ভালো লেগেছে জানি না, তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
গানের জন্য এ রকম ভিডিও কতটা প্রয়োজন?
শিল্পী হিসেবে এটাকে ভালো বা খারাপ কিছুই বলব না। এটা এখন প্রয়োজন হয়ে উঠেছে।

আগে ভিডিও নিয়ে কোনো চিন্তা ছিল না। একটা অ্যালবামের ১০টা গানের মধ্যে হয়তো একটার ভিডিও করেছি। এখন মানুষ গান শোনার পাশাপাশি দেখতেও চায়। এর নেতিবাচক দিক হলো, ছোটবেলা থেকে আমরা সংগীতকে নিজের আয়ত্তে আনার চেষ্টা করেছি।
ওস্তাদ বা শিক্ষকরা আমাদের শিখিয়েছেন, গানটা ভালো করতে হবে। গানের সঙ্গে অভিনয়ও করতে হবে, এটা তো ভাবিনি। এখন গানের ভিডিওতে গায়ক-গায়িকার উপস্থিতি না থাকলে তাঁকে আর মানুষ খুঁজে নিতে চায় না, এটা দুঃখজনক। পর্দায় যাঁকে দেখে, তাঁকেই মাথায় নিয়ে নেয়। এ জন্য বাধ্য হয়ে ভিডিওতে উপস্থিত হতে হয়। আর অডিয়েন্সের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বললে, বরাবরই চলচ্চিত্রের গান বেশি জনপ্রিয়তা পায়। কারণ যেটা শুনছে, সেটা দেখছেও। বিনোদন ব্যাপারটাই এ রকম। তাই দর্শকের জন্য গানের ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনাও জরুরি।

পড়শী যেসব প্রতিষ্ঠান আগে গান প্রযোজনা করত, তারা এখন নাটকে মনোযোগী। বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?
দুঃখজনক ব্যাপার, এর বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে বিপরীতে শিল্পীরা চ্যানেল করেছেন, সেখান থেকেই গান প্রকাশ করছেন। একটা পথ বন্ধ হয়েছে, আরেকটা খুলেছে।

গানে নারীদের স্ট্রাগলের চিত্রটা কী রকম?
শুধু গান নয়, সব কাজেই মেয়েদের স্ট্রাগল করতে হয়। ছেলেদেরও স্ট্রাগল থাকে, তবে মেয়েদেরটা ভিন্ন। আমাকেও অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। ঘর থেকে বাইরে পা রাখলেই মেয়েদের অনেক কিছু মোকাবেলা করতে হয়। নিজেকে ঠিক রেখে, ভালো রেখে চলাটা খুব কঠিন। আর এটাই মূল স্ট্রাগল। ক্ষুদে গানরাজ থেকে এখন পর্যন্ত অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাকে। অনেকেই জানতে চান, আমি গান কম করি কেন? দেখুন, সিন্ডিকেট বলে একটা ব্যাপার আছে। সিন্ডিকেটের বাইরে থেকে কেউ এলে তাঁর পক্ষে কাজ করা কঠিন। আমি কখনো এসব সিন্ডিকেটে থাকি না। যেখানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি, নিরাপদ মনে করি—সেখানেই গান করি।

ইদানীং অভিনয়ও করছেন। শুরুটা কিভাবে?
অভিনয় করতে চাইনি। আমাকে জোরপূর্বক অভিনয় করানো হয়েছে! ‘মারিয়া ওয়ান পিস’ আমার প্রথম নাটক। আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক রহমান স্যার আর পরিচালক সাজিন আহমেদ বাবু ভাই বারবার বলেছিলেন। মনে হলো, যদি তাঁরা ঝুঁকি নিতে পারেন, আমার সমস্যা নেই। পরে আরো কিছু প্রস্তাব এসেছে, করেছি। একদমই শখের বশে করা।

গান ও নাটকে কী কাজ আছে হাতে?
চার-পাঁচটা গান নিয়ে পরিকল্পনা করছি। এর মধ্যে নিজের লেখা-সুরে একটি গান করেছি। তবে ভিডিওটা পছন্দ হচ্ছে না। হয়তো আবার শুটিং করব। কবে প্রকাশ করব, এখনই বলতে পারছি না। আপাতত নাটক করছি না, অভিনয় করতে গিয়ে গানে একটু পিছিয়ে গেছি। গানগুলো আগে রিলিজ করি, তারপর দেখা যাবে।

প্রায় দেড় দশক ধরে সংগীত জগতে আছেন। অনেক কিছুর সাক্ষী আপনি। ইন্ডাস্ট্রিটা এখন ঠিক কী অবস্থায় আছে?
এককথায় বললে, এখন ভাইরালের যুগ চলছে। গান কতটা ভাইরাল হবে, কত ভিউ পাবে—এসব নিয়ে আগে শিল্পীদের চিন্তাই ছিল না। গান ভালোভাবে করতে হবে, সেটাই ছিল মূল ভাবনা। এখন গান প্রকাশ করার সঙ্গে মাথায় রাখতে হয়, সেটা ভাইরাল হবে কি না, কত রিলস বানাবে। গানের চেয়ে এগুলোতে মনোযোগ বেশি। সময়টাই এমন, কিছু করার নেই। ইতিবাচক দিকও আছে, এখন মানুষের কাছে গান পৌঁছানো অনেক সহজ। প্রতিক্রিয়াও সরাসরি পাওয়া যায়।

 

Share this post

PinIt
scroll to top