গাজার দক্ষিণাঞ্চলের বসবাসকারীদের এলাকা ছাড়ার আদেশ দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির এমন আদেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। ইসরায়েলের এ আদেশের ফলে গত অক্টোবরের পর এটি হলো সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের বাস্তুচ্যুত করার আদেশ।
মঙ্গলবার (০২ জুন) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিখ বলেন, খান ইউনিস ও রাফাহর ১১৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা খালি করার আদেশে দিয়েছে ইসরায়েল। এ আদেশের ভুক্তভোগী হয়েছে গাজার এক তৃতীয়াংশ মানুষ। ফলে হাজার হাজার লোক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএর তথ্যমতে, ইসরায়েলের এ আদেশে দেওয়ার সময় এলাকাটিতে প্রায় আড়াই লাখ বসবাস করতেন।
স্টিফেন ডুজারিখ বলেন, গাজা থেকে আমাদের সহকর্মীদের প্রাপ্ত তথ্যমতে ইসরায়েলের সর্বশেষ উচ্ছেদ আদেশের প্রভাব নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ আদেশের ফলে এমন অনেক লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন যারা গত ৯ মাস ধরে বারবার উচ্ছেদের শিকার হয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, এসব এলাকায় বসবাসকারীরা এখন এমন সব এলাকায় পুনর্বাসিত হচ্ছেন যেখানে বেছে নেওয়ার মতো কিছু নেই। নতুন এ আদেশের আওতাভুক্ত এলাকায় ৯০টির বেশি স্কুল রয়েছে। এসব স্কুলের বেশিরভাগে বাস্তুচ্যুত লোকেরা বসবাস করছেন। এ ছাড়া এলাকাটিতে ৪টি চিকিৎসাকেন্দ্রও রয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর গাজায় নজিরবিহীনর হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। তাদের এ হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এ ছাড়া এ সময়ে ২৫৩ জনকে জিম্মি করে তারা। গোষ্ঠীটির এ হামলার পর থেকে হামলার পর গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারা স্থল ও আকাশসহ সবদিকে হামলা চালিয়ে আসছে। এর ফলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। আর সেখানকার বাসিন্দারা সবাই উদ্বাস্তু হয়ে গেছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এ হামলায় ২৭ হাজার ৯২৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৯ মাস ধরে চলা অব্যাহত হামলায় ৮৭ হাজার জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের অনুমান, ইসরায়েলের সামরিক আদেশের দ্বারা আড়াই লাখের মতো ফিলিস্তিনি প্রভাবিত হয়েছেন। তারা দক্ষিণের খান ইউনিসের কাছাকাছি এলাকা ছেড়েছেন। কারণ গাজায় মোট ১৯ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।