অর্জনের চূড়ায় এবার তাঁরা একাট্টা

1719811711-185329b9cd0556bca1680627a1c9eede.webp

দেশের তথ্য ডেস্কঃ

একজন জিভ সামলাতে জানলেও আরেকজন তা পারতেনই না। সুযোগ পেলেই প্রিয় বিরিয়ানিতে কবজি ডুবিয়ে দিতে অভ্যস্ত রোহিত শর্মার জন্যই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিশেষ এক নিয়ম চালু করেছিল বলে প্রচার আছে। সদ্য বিশ্বজয়ী অধিনায়ককে ফিটনেস সচেতন রাখতেই নাকি প্রতি মাসে ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমিতে গিয়ে ইয়ো ইয়ো টেস্ট দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।

অথচ বিরাট কোহলি ঠিক উল্টো মেরুর বাসিন্দা।

চাইলে তাঁদের দুজনের ব্যক্তিচরিতের এমন হাজারটা অমিল খুঁজে নেওয়া সম্ভব। একই সঙ্গে অসম্ভব ভারতের জন্য মাঠের পারফরম্যান্সে একাট্টা এই দুজনকে আলাদা করা।কিন্তু এক দলে থেকেও তাঁদের এই বিচ্ছিন্নতার প্রকাশ বাইরে কখনোই ছিল না। না কোহলি নিজে অধিনায়ক থাকার সময়, না রোহিত নেতৃত্বে আসার পর। দুঃসময়ে বরং একে অন্যের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। একজন আরেকজনের সামর্থ্যের প্রতি পরম আস্থার কথা সগৌরবে ঘোষণা করে গেছেন।

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল পর্যন্ত ব্যাট হাতে বড্ড মলিন কোহলি সাত ম্যাচে করেছিলেন মোটে ৭৫ রান। কিন্তু গায়ানায় ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করার পর রোহিত যেন সতীর্থের ঝলসে ওঠার আগাম ঘোষণাই দিয়ে ফেলেছিলেন, ‘সে সম্ভবত সেরাটা ফাইনালের জন্যই জমিয়ে রেখেছে।’

বারবার তীর ছুঁতে ছুঁতেও তা না পারার হতাশায় বিলীন হতে হয়েছে তাঁদের। এই সুযোগে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে একটু ফিরে যাওয়া যাক। সেবার কোহলির নেতৃত্বে সেমিফাইনাল খেলা ভারত দেখেছিল রোহিতকে রানবন্যা বইয়ে দিতে। পাঁচ-পাঁচটি সেঞ্চুরিতে আসরের সর্বোচ্চ ৬৪৮ রান করা ওপেনার চার বছর পরে আরেকটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজে যখন অধিনায়ক, তখন ফিরিয়ে দিতে কার্পণ্য করেননি কোহলি।

বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম ব্যাটার হিসেবে এক আসরে সাত শতাধিক রানের মাইলফলক পার করে ভারতকে শিরোপার নাগালও পাইয়ে দিয়েছিলেন প্রায়। ৭৬৫ রান করা কোহলির পাশে উজ্জ্বল অধিনায়ক রোহিত শেষ করেছিলেন ৫৯৭ রান নিয়ে। গত নভেম্বরের আহমেদাবাদ অবশ্য তাঁদের অনন্য অর্জনের চূড়ায় পৌঁছাতে না পারার বিষাদ রাগিণীই বাজিয়েছিল।

২৯ জুন বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভাল যেন তা পুষিয়ে দিল কড়ায়-গণ্ডায়। আসরের শুরু থেকে এবার তাঁরা আরো একাট্টা। দুজনেই ইনিংস ওপেন করছিলেন। রোহিতের ঝলক মাঝেমধ্যেই দেখা গেলেও ম্লান কোহলি জ্বলে ওঠার জন্য বেছে নিলেন ফাইনালকে। সেটি তাঁদের দুজনের জন্য শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠল মাথা উঁচু করা বিদায়ের মঞ্চও। বিশ্বকাপ জিতে বিদায় নিতে কজনই বা পারে? তাঁরা পারলেন। এমন নয় যে কেউই আগে কখনো বিশ্বকাপ জেতেননি। সেই ২০০৭ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের কুড়ি-বিশের প্রথম বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরার দিন রোহিতের ব্যাট থেকেও বেরিয়ে এসেছিল ১৬ বলে অপরাজিত ৩০ রানের এক ক্যামিও।

কিংবা একই অধিনায়কের অধীনে ২০১১-এর ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়েও ছিল কোহলির অবদান। কিন্তু পরের বছরগুলোতে চারা থেকে মহীরূহ হয়ে ওঠা এই দুই ক্রিকেটারেরও একজোট হয়ে আরো কিছু দেওয়ার ছিল। দুইয়ে মিলে তাঁদের এক হওয়াটা অবশ্য কিছুতেই হয়ে উঠছিল না। এবার হওয়াতে দায় শোধ করেও এই সংস্করণকে বিদায় জানাতে পারলেন!

Share this post

PinIt
scroll to top