দেশের তথ্য ডেস্কঃ
মারধরের শিকার মেয়েটি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার কৈখালী এলাকার বাসিন্দা ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী।
ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রী বলেন, আমার মা অসুস্থ থাকায় তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে মায়ের জ্বর বেড়ে যাওয়ায় পানি এনে তার মাথায় দেই। মাথায় পানি দিতে গেলে কিছু পানি মেঝেতে পড়ে যায়। তখন টয়লেট থেকে ফ্লোর পরিষ্কার করার ন্যাকড়া এনে পরিষ্কার করে আবার টয়লেটে রেখে আসি। ফেরার পথে ওয়ার্ডের আয়া হ্যাপির সঙ্গে দেখা হয়। তিনি জানতে চান, ন্যাকড়া কেন নিয়েছি। আমি বলি, ফ্লোরে পানি পড়ে গিয়েছিল। তখন ওই আয়া বলেন, আমাদের বললেই হতো। আমি তখন জবাব দেই, আপনাদের দিয়ে পরিষ্কার করালেই ৫০ টাকা দিতে হতো। আমাদের কাছে অত টাকা নেই। এই কথা বলার সাথে সাথে আমাকে টেনে টয়লেটের মধ্যে নিয়ে গিয়ে আটকে ইচ্ছে মতো মারধর করেন। তার থাপ্পড়ে আমার কান, মুখমন্ডল প্রচণ্ড আঘাত পাই। অনেকক্ষণ কানে কিছুই শুনতে পাচ্ছিলাম না। শুধু শো শো শব্দ হচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার বিষয়ে ওয়ার্ডের দায়িত্বরতদের জানিয়েছি। হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে আমি যেন লিখিত অভিযোগ দেই থানায়। আমি মায়ের চিকিৎসা করাতে এসেছি। মাকে রেখে কোথাও যাওয়া অসম্ভব। হাসপাতালের কর্মচারী আমার ওপরে হামলা চালিয়েছে। ব্যবস্থাতো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নেবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো মায়ের চিকিৎসা বন্ধ করে নাম কেটে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন ওয়ার্ডের কর্মচারীরা।
ঘটনার বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে হাসপাতাল প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, হামলাকারী হাসপাতালের নিয়োগপ্রাপ্ত কেউ নন। যে কারণে চাইলেই তার বিরুদ্ধে হাসপাতাল কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পারে না। তবে বহিরাগত হয়ে রোগীর স্বজন মারধর করলে হাসপাতাল কি ব্যবস্থা নেবে এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রশাসনিক দপ্তর থেকে কোনো উত্তর দেয়নি।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন, রোগীর স্বজন মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। তবে তার বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিতে হয়েছে।