দেশের তথ্য ডেস্কঃ
ধূমপানের কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত। ধূমপানে আসক্ত ব্যক্তি ক্যানসার, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের রোগ, ডায়াবেটিস ও ত্বকের দ্রুত বার্ধক্যের রোগে হরহামেশাই ভোগেন। কিন্তু এবার এক ব্যক্তি বিরল এক রোগে আক্রান্ত হলেন। খবর নিউইয়র্ক পোস্টের।
আমেরিকান জার্নাল অব কেস রিপোর্টে ধূমপায়ী ওই ব্যক্তি ও রোগটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, অস্ট্রিয়ান ওই ব্যক্তির গলার ভেতরে চুল গজিয়েছে। ধূমপানের কারণেই তিনি এ জটিল অবস্থায় পড়েন।
তথ্য অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি ৫২ বছর বয়সী। তিনি প্রতিদিন এক প্যাকেট সিগারেট খেতেন। আসক্তির প্রায় ১৭ বছর পর ২০০৭ সালে তিনি কর্কশ কণ্ঠস্বর, শ্বাস নিতে অসুবিধা ও দীর্ঘস্থায়ী কাশির সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসকরা তার গলার ব্রন্কোস্কোপি করেন। সঙ্গে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
পরে রিপোর্ট হাতে পেয়ে অবাক হয়ে যান চিকিৎসকরা। তারা দেখেন, ওই ব্যক্তির গলার ভেতরের একটি অংশে বেশ কয়েকটি চুল গজিয়েছে।
কেস স্টাডি থেকে আরও জানা যায়, মাত্র ১০ বছর বয়সে ওই ব্যক্তির গলায় একটি অপারেশন করা হয়, যেখানে ফুসফুসে অক্সিজেন পৌঁছানোর জন্য একটি কৃত্রিম নল স্থাপন করা হয়। পরবর্তীকালে গলার ওই ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি কানের চামড়া ব্যবহার করে বন্ধ করা হয়। সেখানেই চুল গজায়।
গবেষকদের ধারণা, অতিরিক্ত ধূমপানের জেরে চামড়ার ওই অংশটি গলার সঙ্গে মিশতে পারেনি। এ ছাড়া তা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে সেখানে চুল গজায়। যা চিকিৎসার পরিভাষায় এন্ডোট্র্যাকিয়াল হেয়ার গ্রোথ বলা হয়।
এটি খুবই বিরল একটি রোগ। যা আগে কেবল এক বা দুজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে ঘটেছিল।
এদিকে চুল অপসারণের জন্য ওই অস্ট্রিয়ান ব্যক্তিকে ১৪ বছর ধরে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে অস্থায়ীভাবে চুলের বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও এটি আবারও ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ওই ব্যক্তির চিকিৎসক দল ব্যবস্থাপত্রে লিখেছেন, তার ধূমপানের কারণে এই অবস্থার সূত্রপাত। ধূমপান গলার টিস্যুর প্রদাহকে উস্কে দেয়, যার ফলে স্টেম সেল চুলের ফলিকলে পরিণত হতে হয়। এতেই চুলের বৃদ্ধি সম্ভব হয়।
তারা আরও লেখেন, ধূমপানের অভ্যাস সংশ্লিষ্ট দেহাংশে এন্ডোট্র্যাকিয়াল চুলের বৃদ্ধিকে প্ররোচিত ও উদ্দীপিত করতে পারে। তবে এ ধরনের রোগী বিরল হওয়ায় এ অনুমানটি নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করা এখনো সম্ভব হয়নি।