দেশের তথ্য ডেস্কঃ
বর্তমান দুনিয়ায় সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক। বিশ্বে ৩০০ কোটির বেশি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। অথচ এত বড় সাম্রাজ্য গড়ে তোলার কারিগর কোম্পানিটির সিইও মার্ক জাকারবার্গ মাত্র ১ ডলার বেতন নেন।
অবাক করা বিষয় হচ্ছে, ১ ডলার বেতন নিয়েও তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ধনীদের একজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা ছেড়ে কীভাবে এত ধনী হলেন জাকারবার্গ, তা সবাইকে অবাক করে দেয়।
ইন্টারনেট চালান, অথচ ফেসবুকের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। ২০০৪ সালে কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে মিলে ফেসবুক বানান জাকারবার্গ। প্রতিষ্ঠার এক বছর পরই ১০ লাখ ব্যবহারকারী ফেসবুকে যোগ দেয়।
ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার সূচক অনুযায়ী, বর্তমানে জাকারবার্গের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৮৫ বিলিয়ন ডলার বা ২১ লাখ ৭৩৯ হাজার ৭০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সম্পদের হিসাবে তিনি বিশ্বের চতুর্থ ধনীতম ব্যক্তি।
তার আগে আছেন কেবল জেফ বেজোস, ইলন মাস্ক ও বার্নার্ড আর্নল্ট। কিন্তু কীভাবে এত কোটি কোটি টাকার মালিক হলেন জাকারবার্গ। মানিউইক এক প্রতিবেদনে সে তথ্যই তুলে ধরেছে।
ফেসবুকের সিইও হিসেবে সেই ২০১৩ সাল থেকে মাত্র ১ ডলার বেতন নিচ্ছেন জাকারবার্গ। মানিউইক বলছে, জাকারবার্গের সম্পদের অধিকাংশই আসে ফেসবুকের মালিকানা থেকে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় ফেসম্যাশ নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন জাকারবার্গ। সহপাঠীরা কতটা আকর্ষণীয় এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তার রেটিং দেওয়া যেত।
তবে ব্যাপক বিতর্কের পর সেই ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেন জাকারবার্গ। তবে একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের আইডিয়া পান তিনি। সেই আইডিয়া থেকেই দুই রুমমেট ডাস্টিন মসকোভিটজ ও এদোয়ার্দু সাভেরিনের সঙ্গে মিলে ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন জার্কারবার্গ। শুরুর দিকে এটার নাম ছিল ‘দ্য ফেসবুক’। চালুর পরপরই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট।
জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠান বড় করা হয়। তখন ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আল্টোতে ফেসবুকের কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে শুরুর বছরগুলোতেই বিপদে পড়েছিল ফেসবুক। ২০০৬ সালে জাকারবার্গের সাবেক সহপাঠী ক্যামেরুন ও টেইলার উইকলভস এবং দিব্যা নরেন্দ্র, তার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়। এই তিন জনের দাবি ছিল, তাদের আইডিয়া চুরি করেছেন জাকারবার্গ। পরে ৬৫ মিলিয়ন ডলারে সেই মামলা রফাদফা হয়।
ইমেইল অ্যাকাউন্ট থাকা ব্যক্তিদের জন্য ২০০৭ সালে ফেসবুক উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ ইমেইল অ্যাকাউন্টধারী যে কেউ চাইলেই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারত। কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটি কোটি ব্যবহারকারী ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলে। ২০২১ সালে সাহসী এক পদক্ষেপ নিয়ে ফেসবুকের নাম পরিবর্তন করে করা হয় মেটা।
মেটায় জাকারবার্গে ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। তাই বেতন নামমাত্র হলেও শেয়ারের দাম বেড়ে গেলে পকেট ফুলে ওঠে জাকারবার্গের। আবার ক্ষতিপূরণ বাবদও কাড়ি কাড়ি টাকা কামিয়ে থাকেন তিনি।
ফরচুনের তথ্য মতে, গেল বছর ২৪ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ফেসবুকের এই সহপ্রতিষ্ঠাতা। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহারজনিত এই বিপুল পরিমাণ টাকা পেয়েছেন জাকারবার্গ।