দেশের তথ্য ডেস্কঃ
রিয়াল মাদ্রিদ নাকি ব্রাজিলের? ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের ঘিরে প্রশ্নটা ছিল এমন। কারণ ক্লাব আর জাতীয় দলের জার্সিতে পারফরম্যান্সের ভিন্নতা। গত দুবছর রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে আলো ছড়াচ্ছেন তিনি।
গল মৌসুমে ছিলেন আরও বেশি দীপ্তিময়। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৯ ম্যাচে গোল করেছেন ২৪টি আর ১১টি অ্যাসিস্ট। স্প্যানিশ লিগ, স্প্যানিশ সুপার কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতে আছেন ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে। অন্যদিকে ব্রাজিলের জার্সিতে বেশ রংহীন তার পারফরম্যান্স।
শনিবার (২৯ জুন) কোপা আমেরিকায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে নামার আগে ৩১ ম্যাচে জাতীয় জার্সিতে তার গোল ছিল মাত্র তিনটি। ক্লাবের পর এবার তার সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল জাতীয় দলের জার্সিতে জ্বলে ওঠার।
ব্রাজিলের মধ্যমণি হতে তার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নেইমার জুনিয়রের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসার। গত প্রায় এক দশক ধরে ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমার। যে কোনো টুর্নামেন্টে তাকে ঘিরে হতো ব্রাজিলের সকল পরিকল্পনা।
চোটের কারণে কোপা আমেরিকার এবারের আসরে খেলা হচ্ছে না ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা নেইমারের। এবার ভিনিনিয়ুস জুনিয়রকে ঘিরেই রণকৌশল সাজানোর কথা জানিয়েছিলেন সেলেসাওদের নতুন কোচ দরিভাল জুনিয়র।
প্রথম ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে ব্রাজিল। একাধিক গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করে সমালোচনার মুখে পড়েনি তিনি। এ ছাড়া রিয়াল মাদ্রিদ তারকার সামগ্রিক পারফরম্যান্স ছিল ম্লান।
তবে সেরা তারকা জানেন কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, কখন জ্বলে উঠতে হয়। বড্ড প্রয়োজনের সময়ে জ্বলে উঠলেন তিনি। দিনের প্রথম ম্যাচে কোস্টারিকাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে কলম্বিয়া।
প্যারাগুয়ের বিপক্ষে পয়েন্ট হারালে ডি-গ্রুপ থেকে কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে যেত শেষ আটের পথ। ম্যাচের শুরু থেকে গতিময় ও প্রত্যয়ী ছিলেন ভিনি। জোড়া আক্রমণে জানান দেন সমর্থকদের ভালো কিছু উপহার দিতে যাচ্ছেন রিয়াল তারকা।
একের পর এক আক্রমণ করেও গোল পাওয়া যাচ্ছিল না। তার উপর ম্যাচের ৩০ মিনিটে পেনাল্টি মিস করে বসেন লুকাস প্যাকুয়েতা। এতে হতাশা বাড়ে ব্রাজিল শিবিরে। তবে ৩৫ মিনিটে হতাশা, শঙ্কা, আশঙ্কা সবকিছু দূর করে দেন ভিনিসিয়ুস।
গতিময় ও দুর্দান্ত ফুটবলে দারুণ ফিনিশিংয়ে এবারের কোপায় ব্রাজিলকে প্রথম গোল উপহার দেন তিনি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলটি করেন এই উইঙ্গার।
দুহাত চোখের কাছে নিয়ে নেইমারের অনুকরণে দ্বিতীয় গোলের উদযাপন করেন ভিনি। এতে নেইমারকে উপহাস নাকি তার ছায়া থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গতি—সেটা ভিনিই ভালো বলতে পারবেন!
তবে আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, একই ভাবে গোল উদযাপন করে নেইমারকে উপহাস করেছেন ভিনি। গ্যালারিতে বসে এর সবকিছু দেখছিলেন ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
এ ম্যাচে হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল তার সামনে। ৬৩ মিনিটে বক্সের ভেতর আবারও হ্যান্ডবল করে ব্রাজিলকে দ্বিতীয় পেনাল্টি উপহার দেয় প্যারাগুয়ে। প্যাকুয়েতার পরিবর্তে জোড়া গোল করা ভিনি শট নিলেই হয় তো ব্রাজিলের জার্সিতে পেয়ে জেতেন প্রথম হ্যাটট্রিক।
তা না হলেও এই জোড়া গোলে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে তার। কোপার শিরোপা পুনরুদ্ধারে ভিনিসিয়ুসের এমন পারফরম্যান্সই তো প্রত্যাশা ব্রাজিল সমর্থকদের।