লিবিয়ায় মানব পাচার ও মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের মূল হোতাসহ গ্রেপ্তার ২

image_99678_1719583430.webp

দেশের তথ্য ডেস্কঃ

লিবিয়ায় ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়ে যায় একটি চক্র। সেখানে তাদের জিম্মি করে চালানো হয় অকথ্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এই নির্যাতনের দৃশ্য ধারণ করে ইমোতে পাঠানো হয় জিম্মি থাকা ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে। কখনো নির্যাতন করা অবস্থায় ইমোতে সরাসরি ভিডিও কলেও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয় লাখ লাখ টাকা। এই চক্রের মূলহোতা বাদশা মিয়া (৪২) ও তার সহযোগী আরজু বেগমকে (৩১) কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।

শুক্রবার (২৮ জুন) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান।

তিনি বলেন, মানব পাচারকারী চক্রটি বিদেশগামী অসহায় লোকদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই নিয়ে যায়। তারপর লিবিয়ায় থাকা আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিমের তত্ত্বাবধানে তাদের জিম্মি করা হয়। জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপর একটি চক্রের কাছে হস্তান্তর করে। এই চক্রটি ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে ইমোতে কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করত। মুক্তিপণ আদায়ের পর ভুক্তভোগীদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠিয়ে দিত। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় অনেকেই মারা যায়। মারা যাওয়া কিছু লোক উদ্ধার হয় এবং তাদের মধ্য থেকে অল্পসংখ্যক লোক ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছে।

গত বছর মাগুরার মো. নাছির হোসেন নামে এক ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম টিএইচবি শাখার একটি দল। মামলায় ওই ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, তার চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে তিনি ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া যান। সেখানে লিবিয়া প্রবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলসের কাজ করতেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নাছিরকে লিবিয়ার অজ্ঞাত স্থানে মানব পাচারকারী চক্র আটক করে। তারপর তার পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। এরপর তার পরিবারকে বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করে।

আজাদ রহমান বলেন, বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে একটি চলতি হিসেব খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। ওই হিসেবে মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯১০ টাকা জমা হয় এবং ১০ লাখ ৯৭ লাখ ২৮৫ টাকা তোলা হয়। বাদশা মিয়া ও আরজু সম্পর্ক চাচাতো ভাই-বোন। তারা কক্সবাজারের পেকুয়ার বাসিন্দা। দুজনই আদালতে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে সংযোগ থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

Share this post

PinIt
scroll to top