দেশের তথ্য ডেস্কঃ
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তুমুল সংঘাত চলমান রয়েছে। একের পর এক মর্টার শেল ও গোলার বিকট শব্দে এপারে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল থেকে চলা সংঘর্ষে আবারও বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা হতাহত হয়েছে।
রাখাইনের মংডু শহরের সিকদার পাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটার দিকে মংডুর কাছে রকেট লঞ্চার ও বোমা হামলা হয়েছে।
জান্তা সমর্থিত বাহিনী বিদ্রোহী আরাকান আর্মিকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালায়। এতে পাশের গ্রাম খাড়ির পাড়া এলাকার রশিদ উল্লাহর বাড়িতে বিমান থেকে বোমা হামলায় প্রায় ১০ জন নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন। নিহতদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।মংডু মুন্ডি পাড়ার বাসিন্দা ফয়সাল জানান, রাখাইনে দুই বাহিনীর লড়াইয়ে মংডু ও আশেপাশের এলাকাগুলোতে খুব ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এখানে রোহিঙ্গারা চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ থাকায় সংঘাতের মাঝেও রোহিঙ্গারা ঘর ছাড়তে চাচ্ছে না। উপায়ন্তর না থাকায় রোহিঙ্গা হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।মিয়ানমার মংডু মুন্ডি পাড়ার আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ একরাম বলেন, মংডু শহরে জান্তা বাহিনীর একরি চৌকির দখলকে কেন্দ্র করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে মংডু শহরের আশিক্ষা পাড়া,গইন্যা পাড়া ও গর্জনিয়া পাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে বিমান হামলাও চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। অনেক রোহিঙ্গা প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে বাংলাদেশ থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে নাফনদে আটক করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।রাখাইনে খবর নিয়ে জানা যায়, গত চারদিনের সংঘাতে রাখাইনে মংডু এলাকার লোকজন সবচেয়ে বেশি হুমকিতে ছিলেন। নাফনদের ওপারে মংডু শহরের কয়েকটি এলাকার আশেপাশে রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগ ইতোমধ্যে ঘর ছেড়ে নাফনদের পারে অবস্থান করছে।
তারা সীমান্তপাড়ি দিয়ে টেকনাফে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে বলেও জানা গেছে।এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাখাইনের সংঘর্ষের ঘটনায় টেকনাফ সীমান্তে মর্টার শেল ও বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়। এসময় মিয়ানমারের আকাশে যুদ্ধ বিমান উড়তে দেখা যায়। রাখাইনের ওপারে সংঘাতে রোহিঙ্গাদের একটা অংশ বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে। সেজন্য সীমান্তে-নাফনদে বিজিবি-কোস্ট গার্ড সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।