প্রবীন সাংবাদিক হুমায়ুন কবির বালুর ২০তম হত্যাবার্ষিকী আজ

Humayen-kabir-balu-1.jpg-হুমায়ুন-কবির-বালু-1.jpg

দেশের তথ্য ডেস্কঃ

একুশে পদকপ্রাপ্ত নির্ভীক সাংবাদিক, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক জন্মভূমি’র সম্পাদক হুমায়ুন কবীর বালু’র ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ । এ উপলক্ষে খুলনা প্রেসক্লাব, জন্মভূমি পরিবার ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে : বেলা ১১টায় শহিদ সাংবাদিক স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে ক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল।

২০০৪ সালের এ দিনে (২৭জুন) হুমায়ূন কবীর বালুর কর্মস্থল দৈনিক জন্মভূমির প্রধান ফটকে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হন। একমাত্র মেয়ে হুসনা মেহেরুবা টুম্পা মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে কৃতকার্য হয়। সেই আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে তিনি বড় ছেলে আসিফ কবীর, ছোট ছেলে আশিক কবীর ও মেয়ে টুম্পাকে নিয়ে নগরের ইকবালনগরের বাড়িতে যান মাকে মিষ্টি মুখ করতে।

ইকবালনগর থেকে নিজ গাড়িতে করে হুমায়ূন কবীর বালু এসে পৌঁছান দৈনিক জন্মভূমি ভবনের সামনে। গাড়ি থেকে নেমে দৈনিক জন্মভূমি ভবনের গেটে পা দিতেই সন্ত্রাসীরা জাতিসংঘ শিশু পার্কের সামনে থেকে তার ওপর বোমা নিক্ষেপ করে। সন্ত্রাসীদের ছোড়া বোমা বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

তাৎক্ষণিক জন্মভূমি পরিবারের সদস্যরা, স্থানীয় লোকজন, সাংবাদিক ও আত্মীয় স্বজন তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা হুমায়ূন কবীর বালুকে মৃত ঘোষণা করেন। বোমার স্পিন্টারে বড় ছেলে আসিফ কবীরের গায়ে লাগলেও তা মারাত্মক ছিলো না।

সাংবাদিক হুমায়ূন কবীর বালু নড়াইলের ইতনা গ্রামে ১৯৪৭ সালের ৪ অক্টোবর মাতুলালয়ে জন্মেছিলেন সাংবাদিক বালু। তার বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার বড়ফা গ্রামে। বাবা ইমান উদ্দিন সরদার, মা রাবেয়া বেগম। হুমায়ুন কবির বালু খুলনা শহরের বি কে ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক, সরকারি আযম খান কমার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে যুক্ত হন ‘সাপ্তাহিক জন্মভূমি’র প্রকাশনার সঙ্গে।

১৯৭৬ সালে খুলনা নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৩ সালে সাপ্তাহিক জন্মভূমি দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তিনি এর সম্পাদক ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও তিনবার নির্বাচিত সভাপতি, খুলনা আঞ্চলিক সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, মিড-টাউন রোটারি ক্লাবের সভাপতি, বাংলাদেশ কাউন্সিলর অব এডিটরসের সদস্য, জনসংখ্যা পরিষদের সদস্য, খুলনা আঞ্চলিক সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি, পরিবার পরিকল্পনা সংস্থার সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালক ছিলেন।

সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য হুমায়ুন কবির বালু ১৯৯৩ সালে সুজলা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক, ১৯৯৪ সালে ডক্টর আশরাফ সিদ্দিকী পদক এবং ১৯৯৭ সালে সুর-ঝঙ্কার সম্মাননা লাভ করেন। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৯ সালে তাকে একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়।

Share this post

PinIt
scroll to top