দেশের তথ্য ডেস্ক –
বুধবার বিকেলে গাবতলীর পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, বেপারিরা তাদের পশুগুলো নিয়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন। এখনও ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু ছাগল আসতে দেখা গেছে।
আর মাত্র কদিন বাকি কোরবানির ঈদের। তবে এখনও জমে ওঠেনি রাজধানীর সবচেয়ে বড় গাবতলী পশুর হাট। কিছু ক্রেতা হাটে এলেও তারা মূলত বাজার দর যাচাই করে ফিরে যাচ্ছেন। আর পশু বিক্রেতারা হাটে আনা পশুকে সেবা-যত্ন আর পশুর দাম বলেই সময় কাটাচ্ছেন। তবে হাটের বিভিন্ন জায়গায় তাঁবু টানানো ও গেটের সাজসজ্জার কাজ শেষ হয়েছে।
বুধবার বিকেলে গাবতলীর পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, বেপারিরা তাদের পশুগুলো নিয়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন। এখনও ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু ছাগল আসতে দেখা গেছে। এরই মধ্যে পশু আর বেপারিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েনসহ ওয়াচ টাওয়ারও স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।
কুষ্টিয়া থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী ছমির মিয়া বলেন, ৩ দিন আগে আমি গরু নিয়ে গাবতলীর হাটে আয়চি। এইবার ইদে আমি ৭টি গরু আনছি। এখনও একটাও বিক্রি হয়নি। সবাই দাম শুনে চলে যাই। ঢাকার মানুষ এতো তাড়াতাড়ি গরু কেনে না। তাদের তো গরু রাখার জাইগা নেই। আশা করছি শুক্রবার থেকে বেচাকেনা শুরু হবে।
তিনি বলেন, এই ৭ টি গরুই আমি আমার বাসায় পালছি। সবগুলো আমার গোয়ালেরই। সব গরুরই প্রায় এক সাইজ। দুই লাখের ওপরে দাম চাইছি। দেখি কী হয়।
রাজশাহীর তানোর থানা থেকে আসা আতাউর রহমান বেপারি নিউজবাংলাকে বলেন, আমি এবার দুইটা গরু নিয়ে আসছি। একটা অনেক বড় গরু আর একটা মাঝারি। বড় গরুর নাম রাজা বাবু। এর দাম চাচ্ছি ১৫ লাখ টাকা। তবে দু’দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো ক্রেতা দাম বলেননি। আশা করছি শুক্রবার থেকে বেশি ক্রেতারা আসবে। তখন হয়তো দামাদাম হবে।
গরু দাম এতো বেশি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইসব বিদেশি গরু পালতে অনেক খরচ। মাসে আমার পরিবারের পেছনে যা খরচ করি তার থেকে বেশি খরচ হয় আমার এই গরু পালতে। এখন ভুট্টার বস্তা ১৬ শ টাকার বেশি। আর এই ভুট্টার বস্তা খুললেই ও সব খেয়ে ফেলে। এ ছাড়া এই গরুগুলো আনতেই তো আমার ৩০ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া খরচ হয়েছে। এখানে প্রতিদিনের আরও খরচতো রয়েছে। সবমিলিয়ে ভালো দাম পাবো কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
পাবনা থেকে আসা সিরাজ নামের এক বেপারি বলেন, ৮টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। একটি গরুও ৭০ হাজারে বিক্রি হয়েছে আরও ৭টা বাকি আছে। আমার ছোট গরু তাই চিন্তা করি না। দুই এক দিনের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাবে।
এবারের হাটে গরুর দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবার গরুর দাম গতবারের মতই। দাম বাড়েনি। কিন্তু আমাদের তো গরু পালতে খরচ বেড়েছে। তাই এবার লাভ তেমন একটা হবে না।
এবারের গাবতলীর হাটে মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার বেশ উপস্তিতি দেখা গেছে। আতিয়ার নামের এক ছাগল ব্যাবসায়ী বলেন, এবার আমি সিরাজগঞ্জ থেকে ৬টি ছাগল নিয়ে আসছি। আমার এখানে তিনি থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার ছাগল আছে। দুইটা বিক্রি হয়েছে, আর ৪ টা বাকি আছে।
কথা হয় মোহাম্মাদপুর থেকে আসা কাইসার নামের এক ক্রেতার সাথে। তিনি বলেন, মূলত গাবতলীতে এলাম গরুর দাম জানতে। আমরা ৬ জন বন্ধু মিলে কোরবানি দেব। দাম জেনে গেলে আমাদের হিসাব করতে সুবিধা হবে।
ইকবাল নামের আরেক ক্রেতা বলেন, আমাদের বাসায় গরু রাখার জাইগা নেই। আমরা ইদের ২-১ দিন আগে কিনব। এমনি দেখতে এলাম। তবে এরা এবার দাম বেশি চাচ্ছে মনে হচ্ছে। গতবার আমরা দেড় লাখ টাকার যে গরু কিনেছিলাম এবার প্রায় ওই রকম গরুর দাম ২ লাখ চাচ্ছে। এখন আপেক্ষা করব দেখি দাম পড়ে কি না।