২০ শতাংশেরও কম ভোট পেয়ে , ৩৫ জন চেয়ারম্যান হয়েছেন

6-2.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক।।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে অন্তত ৩৫টি উপজেলায় নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা মোট ভোটারের ২০ শতাংশের কম জনসমর্থন পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন ১০ শতাংশ অথবা তার কম ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে পাওয়া এ ধাপের বেসরকারি ফলাফল বিবরণী পর্যালোচনা করে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

২০ শতাংশেরও কম ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান ৩৫ জন​​​​​​​এই ধাপে ভোট পড়ার হার ৩৪.৭৭ শতাংশ, যা চার ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সর্বনিম্ন।

এর আগে প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ৩৬.১ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ৩৭.৫৭ শতাংশ এবং তৃতীয় ধাপে ছিল ৩৬.২৪ শতাংশ। এই ভোটের হার গত দেড় দশকের মধ্যে উপজেলা নির্বাচনে সর্বনিম্ন।
বেসরকারি ফলাফল বিবরণী অনুযায়ী, চতুর্থ ধাপে সর্বোচ্চ ৬০.৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে ভোলার মনপুরা উপজেলায়। ৫০ শতাংশ অথবা তার বেশি ভোট পড়েছে ৯টি উপজেলায়।

সর্বনিম্ন ভোট পড়েছে নওগাঁ সদর উপজেলায়—২০.৮৭ শতাংশ। এই ধাপে মোট ৪৯ লাখ ৩৩ হাজার ৫৫৫ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
ফলাফল বিবরণী বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিজয়ী চেয়ারম্যানদের কেউই নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের ৪০ শতাংশ জনসমর্থন পাননি। ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন পাঁচজন।

সর্বোচ্চ ৩৭.৮১ শতাংশ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদে আতাউর রহমান। সর্বনিম্ন ৭.৬ শতাংশ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলায় তোফাজ্জল হোসেন।
গত বুধবার চতুর্থ ধাপে ৬০টি উপজেলার ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে একটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ভোটার উপস্থিতি কম থাকায় প্রার্থীরাও নির্বাচিত হয়েছেন খুব কম ভোটে।

গত ৮ মে ১৩৯ উপজেলায় অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের ভোটে ৮১ জন, ২১ মে ১৫৬টি উপজেলায় দ্বিতীয় ধাপের ভোটে ৮৯ জন এবং ২৯ মে ৮৭টি উপজেলায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের ভোটে ৪৭ জন চেয়ারম্যান মোট ভোটের ২০ শতাংশেরও কম পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

ক্রমে ভোটের হার কমতে থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই জনগণ ভোটের প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যার ফলে উপজেলা নির্বাচনে কেউ কেউ ৬-৭ শতাংশ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন। নির্বাচনব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কী—এসব নিয়ে আর কথা বলতে চাই না।’

আন্ত জেলায় ভোটের হারে বড় ব্যবধান

চতুর্থ ধাপের ভোটে ভোলার মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলায় ভোট পড়ার হারে রয়েছে বড় ব্যবধান। এর মধ্যে মনপুরায় এ ধাপের সর্বোচ্চ ৬০.৬৮ শতাংশ ভোট পড়লেও চরফ্যাশনে ভোট পড়ার হার মাত্র ২২.০১ শতাংশ।

একই রকম চিত্র বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলায়। পাশাপাশি উপজেলা হলেও আমতলীতে প্রদত্ত ভোটের হার ২৯.৬৫ শতাংশ আর তালতলী উপজেলায় তার প্রায় দ্বিগুণ—৫৭.৯৪ শতাংশ।

ইভিএমে ভোটের হার কম

চতুর্থ ধাপের ভোটে ছয়টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এসব উপজেলায় গড় ভোটের হার ২৯.৭০ শতাংশ বলে জানিয়েছে ইসি। বাকি ৫৪ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হয় ব্যালট পেপারে। এসব উপজেলায় ভোট পড়ার হার ছিল ৩৫.৬০ শতাংশ। ইভিএমে ভোট পড়ার সর্বোচ্চ হার সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে—৩৭.৮০ শতাংশ।

Share this post

PinIt
scroll to top