দেশের তথ্য ডেস্ক।।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে যেতে না চাওয়ায় শিকলে বেঁধে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে মা-বাবা বিরুদ্ধে। নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসে। তবে ঘটনার পরপরই মেয়ে নিয়ে তারা আত্মগোপনে চলে যান।
শনিবার (১ জুন) রাতে এই ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি সোমবার (৩ জুন) আলোচনায় আসে।
জানা গেছে, তিন মাস আগে উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের জামাল হাওলাদারের মেয়ে হাবিবা আক্তারের (১৩) পারিবারিকভাবে রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের শাহজাহান মোল্লার ছেলে সাজিদ মোল্লার সঙ্গে বিয়ে হয়। হাবিবা বাগধা মহিলা মাদরাসার ইয়াস দাহামের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। বিয়ের দুই মাস পর শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন হাবিবা। সে তার মাকে জানান, স্বামীর বাড়িতে আর ফিরে যাবে না।
এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে হাবিবার মা-বাবা তাকে ফিরে যাওয়ার কথা বললেও সে রাজি হয়নি। সর্বশেষ শনিবার সন্ধ্যায় হাবিবার দুই হাত-পা শিকলে বেঁধে মা-বাবা তাকে মারধর করে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য চাপ দেন। এ সময় হাবিবা চিৎকার করলেও কেউ বাঁচাতে আসেনি। তবে গোপনে স্থানীয় কেউ সেই নির্যাতনের ভিডিও করে স্যোসাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেন।
খবর পেয়ে আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ হোসেন ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ আসার খবর পেয়ে হাবিবার পরিবার ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যান।
হাবিবার মা মারুফা বেগম ঢাকা পোস্টকে মোবাইল ফোনে বলেন, আমরা দরিদ্র মানুষ। মেয়েকে লেখাপড়া করাতে না পারায় বিয়ে দিয়ে দেই। সে স্বামীর বাড়িতে আর ফিরে যেতে চায় না। তাই শিকল দিয়ে বেঁধে ভয় দেখিয়েছি।
বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি জেনে প্রশাসনকে জানিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
ভুক্তভোগী হাবিবার বাবা জামাল হাওলাদার মোবাইল ফোনে বলেন, আমার স্ত্রী মারুফা বেগম মেয়ে হাবিবাকে নিয়ে গৌরনদী উপজেলার বাউরগাতী গ্রামের আমার বোন জামাইয়ের বাড়ি রয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে এসআই মাহফুজ হোসেনকে শনিবার রাতে হাবিবাকে উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে পাঠালে তার পরিবার আগে থেকে টের পেয়ে ঘরে তালা মেরে পালিয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিন বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে এ ব্যাপারে অবগত হয়েছি। বিষয়টি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ব্যাপারে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।