দেশের তথ্য ডেস্ক।।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ। কুষ্টিয়া থেকে ট্রেনে পার্বতীপুর। সেখান থেকে দ্রুতযান এক্সপ্রেসে চেপে রওনা হন পঞ্চগড়ের উদ্দেশে। ট্রেনে ওঠার পরেই তার পাশের সিটে বসেন এক ব্যক্তি।
পরিচয়ের সময় ওই ব্যক্তি জানান তার বাড়িও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়। এরপর তাদের দুজনের আলাপ জমতে থাকে। এক পর্যায়ে রশিদের কাছে পান চেয়ে বসেন ওই ব্যক্তি।
দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে নিজে কলা বিস্কুট কিনে খেতে অনুরোধ করেন রশিদকে।
রশিদ শুরুতে আপত্তি জানালেও পরে একটি কলা ও বিস্কুট খান। এরপর কী হয়েছে, তা মনে নেই রশিদের।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আব্দুর রশিদকে রেলওয়ে পুলিশ অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। শুক্রবার সকালে জ্ঞান ফিরলে কীভাবে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েছেন তা জানান তিনি।
তবে তার খুব বেশি কিছু খোয়া যায়নি। কাপড় ও আমের ব্যাগটি নিয়ে গেছে। পকেটে তেমন টাকা নিয়ে বের না হওয়ায় রক্ষা পেয়েছেন।
এর দুই দিন আগে মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী থেকে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস থেকে অচেতন অবস্থায় এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে রেলওয়ে পুলিশ। রুটি খাইয়ে ওই ব্যক্তির কাছে থাকা ১৪ লাখ টাকাসহ সব নিয়ে চলে গেছে অজ্ঞান পার্টি।
চেতন পাওয়ার পর হাসপাতালের কাউকে না জানিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ায় তার নাম জানাতে পারেনি কেউ। শুধু জানা গেছে তার বাড়ি পীরগঞ্জে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-পঞ্চগড় রেলপথে হঠাৎই সক্রিয় হয়ে উঠেছে অজ্ঞান পার্টি। খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে যাত্রীদের খাইয়ে সব লুটে নিয়ে যাচ্ছে তারা।
অজ্ঞান পার্টির খ্প্পরে পড়া আব্দুর রশিদ বলেন, আমি তাকে বলেছি আমার ব্যাগে আম আছে তুমি চাইলে খাও আমি বাইরের কলা খাবো না। সে আমাকে অনেক জোরাজুরি করলে আমি একটি কলা ও বিস্কুট খাই। তারপর আর আমি কিছু বলতে পারি না। ট্রেনে যাতায়াত এখন এদের কারণে রিস্কি হয়ে গেছে।
দিনাজপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি। আমরা তাদের কাছে তথ্য নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি।
পার্বতীপুর রেলওয়ে জেলার পুলিশ সুপার ফারহাদ আহমেদ বলেন, রেলপথে অপরাধের ধরন প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে। একেক সময় একেক জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনা ঘটছে। আমরা অপরাধের ধরন স্টাডি করে অভিযান পরিচালনা করছি। সেই সঙ্গে যাত্রীদের সচেতনতা বাড়ানোর জন্যও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আমরা বার বার যাত্রীদের অনুরোধ করছি যেন, অপরিচিত কারো দেওয়া কিছু না খায় এবং সতর্ক থাকে।