দাকোপে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডব,ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে ব্যাপক এলকা প্লাবিত।

dacope-khulna-news-pic-28-5-24-scaled.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক।।

 

দাকোপ(খুলনা)প্রতিনিধিঃঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে খুলনার দাকোপে বিভিন্ন নদ—নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানিরউচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১ নম্বর পোল্ডারের পৃথক ৭টি স্থানে ওয়াপদা বেড়িবাঁধভেঙে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভাঙন কবলিত ৫টি স্থানে বাঁধ আটকাতে সক্ষম হলেও বাকিদুইটি স্থানে বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। বাঁধ আটকালেও ওই সব স্থানগুলো রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকিতে।ফলে এলাকার হাজারো মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এদিকে ভাঙন কবলিত স্থানগুলো পরিদর্শন করছেন
স্থানীয় সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডলসহ আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা।এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ ও ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিভিন্ন নদ—নদীতে পানিরউচ্চতা বৃদ্ধি পায়। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১ নম্বর পোল্ডারের উপজেলার কামিনীবাসিয়া ভোলা
মেম্বরের বাড়ির কাছে ৮০ ফুট, কামিনীবাসিয়া পুরাতন পুলিশ ক্যাম্পের পাশে ৬০ ফুট, বটবুনিয়াবাজারের পশ্চিম পাশে ২০ ফুট ও ৫০ ফুট, পানখালি ফেরিঘাটের পূর্ব পাশে সাইক্লোন সেন্টারে কাছে
২০ ফুট, খলিশা স্লুইচ গেট সংলগ্ন ৩০ ফুট ও লক্ষ্মীখোলা খেযাঘাটের সামনে ২০ ফুট পৃথক ভাবেওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এছাড়া আরো কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে পানি উপচে পড়েবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে কামিনীবাসিয়া, বটবুনিয়া, পানখালী, খলিশা এলাকা প্লাবিত হয়েঅসংখ্য মৎস্য ঘের ও পুকুর তলিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায় এবং ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।বটবুনিয়া এলকার প্রনব কবিরাজ এ প্রতিবেদককে জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নদীতে পানি
বৃদ্ধি পাওয়ায় বটবুনিয়া বাজারের পাশে পৃথক দুটি স্থান ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে অনেকেরপুকুর ডুবে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায়। এছাড়া বাড়ি ঘরেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমনকি গবাদিপশুওবিলে চরাতে পারছে না। বর্তমানে একটি বাঁধ আটকানো হয়েছে এবং অপরটির কাজ চলমান রয়েছে।কিন্তু এখনো ঝুঁকি মুক্ত হয়নি আমরা। টেকসই বেড়িবাঁধ না দিতে পারলে আবারো প্লাবিত হওয়ারআশংকা বিরাজমান। একই অভিমত ব্যাক্ত করেন, কামিনীবাসিয়া এলাকার আছাবুর সরদার ও পানখালী
এলাকার ফাল্গুনী হালদার।পানখালি ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহমেদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায়পানখালী ও লক্ষ্মীখোলা এলাকায় স্থানীয়দের নিয়ে বাঁধ মেরামত করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়া খোনা মোল্যাবাড়ির সামনে কিছুটা ওয়াপদা রাস্তা ঝঁুকিপূর্ণ রয়েছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, রেমালের প্রভাবে বাঁধ ভেঙে এলাকায় লবণ পানিঢুকে গোটা উপজেলায় ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার কৃষি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রঞ্জিৎ কুমার বলেন, ঝড়ের প্রভাবে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৫৬০টিঘের ও পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। এতে ৩৩ কোটি ৮৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।এবিষয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ আব্দুল কাদের জানান, ঝড়ের প্রভাবে উপজেলার বিভিন্নএলাকায় ৮৫০২টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১৬৯০৫টি ঘরবাড়ি আংশিকক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া ৬ কিঃমিঃ ওয়াপদা বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাছাড়া২৫৪০৭টি পরিবারের ১ লক্ষ ২২ হাজার ৩০২ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।এব্যাপারে খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ভেঙে যাওয়া
সবগুলা স্থানে বাঁধ আটনো হয়েছে। তবে কামিনীবসিয়া এলকায় একটি বাঁধ আটকানোর পর পুনরায়আবার নদীর জোয়ারের পানির চাপে ভেঙে গেছে। পরবর্তী ভাটায় আবার আটকানোর চেষ্টা করা হবে।

Share this post

PinIt
scroll to top