রামপালে রিমলের তান্ডবে বাড়িঘর বিধ্বস্ত, মৎস্য ঘের ভেসে একাকার

13-18.jpg

রামপাল (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ

বাগেরহাটের রামপালে গত ১৮ ঘণ্টা ধরে চলা ঘূর্ণি ঝড় রিমালের তাণ্ডবে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে । সোমবার (২৬ মে) সকালের পর মংলা বন্দরে ১০ নম্বর থেকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেতে নামিয়ে আনে আবহাওয়া অফিস। তবু দিনভর চলে রিমলের তান্ডব । যেন শেষ হইয়াও হইল না শেষ। প্রবীনরা বলছেন ১৯৯১ সালের পর এত্ত লম্বা সময় ধরে কোন ঝড়ের স্থায়ীত্ব দেখেননি তারা ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামপাল প্রায় ২ লক্ষ মানুষের বসবাস এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ পানিবন্ধি হয়ে রয়েছে। রবিবার (২৬ মে) দিনগত রাতভর ও সোমবার (২৭ মে) সারাদিন রিমলের তান্ডবে রামপালের আধাঁপাকা ১ হাজার ২০০ বাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে। এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকরী খাত চিংড়ি ও সাদা মাছের ঘের প্রায় শতভাগ তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। রবিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে খুলনা মংলা মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গবাদি পশুর আশ্রয় কেন্দ্র, মুরগীর ফার্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষের বাড়ী ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে কি পরিমান আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা এখনই (এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) নির্নয় করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
এই অবস্থায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাত্র ৫ টন চাল সহায়তা বরাদ্দ দেয়া হলেও সেটি সব জায়গাতে বণ্টন করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে ত্রান সহায়তা পৌছানো যাচ্ছে না। এতে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষগুলোর দূর্ভোগ আরো বেড়েছে।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্মকর্তা মো. মতিউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্থায়ী অস্থায়ী মিলে মোট ১৬৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাতে ৮ হাজার ৮০০ দূর্গত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তার মধ্যে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধিরা রয়েছেন। তাদের জন্য চিড়া, গুড়, দিয়াশলাই, মোমবাতিসহ অন্যান্য উপকরণ দেয়া হয়েছে। প্রতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের খিচুড়ি রান্না করে দূর্গতদের দিতে বলা হয়েছে। দূর্যোগ না কমা পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানের জন্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১১ টি মেডিকাল টিম গঠন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। প্রতি ঘণ্টায় ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কার্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা জানিয়েছেন, দূর্যোগের ক্ষতি কমাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে। আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষের খাবার সরবরাহ ঠিক রাখতে কাজ করছি। কোথাও কোন খারাপ খবর পাওয়া গেলে সাথে জানালে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। এ জন্যে তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন ।

Share this post

PinIt
scroll to top