দেশের তথ্য ডেস্ক।।
দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি শক্তিশালী নিম্নচাপে পরিণত হয়ে এগিয়ে আসছে বাংলাদেশের দিকে। যা আরও উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়ে আজ শনিবার নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এ পরিণত হতে পারে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপটি যদি সত্যিই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা ঘিরে তাণ্ডব চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিমের প্রধান আবহাওয়া গবেষক খালিদ হোসেন বলেন, নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হলে এর শক্তিমত্তা ও ল্যান্ডফল সম্পর্কে আরও বিস্তারিত বলতে পারব। তবে ইতোমধ্যে এর গতিবিধি পর্যালোচনা করে যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা হলো, এটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রমের আশঙ্কা তৈরি করেছে। ভারতের ঐড়িষ্যা রাজ্য থেকে শুরু করে মায়ানমারের সিত্তিই, এই রেঞ্জের যেকোনও স্থান থেকে এটি উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে সর্বোচ্চ ঝুঁকি থাকতে পারে সাতক্ষীরা থেকে চট্টগ্রামের উপকূলভাগ।
তবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এটি অনেক বেশি তীব্রতা সম্পন্ন বা সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারবে না। এর পরিবর্তে এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮৫ থেকে ১৩৫ কিঃমিঃ প্রতি ঘণ্টায় থাকতে পারে। এর সর্বোচ্চ শক্তি উপকূলভাগ অতিক্রম করার সময় পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
কোথায় আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি :
১। সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার এ সম্ভাবনা থাকবে শতকরা ৬৫ ভাগ।
২। উড়িষ্যার উত্তর থেকে পশ্চিম বঙ্গ পর্যন্ত সম্ভাবনা ২৫ ভাগ।
৩। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শতকরা ১০ ভাগ।
বাংলাদেশে এর প্রভাব :
সম্ভাবনা ১ : যদি এটি বাংলাদেশের পশ্চিমে তথা কলকাতা থেকে সুন্দরবন উপকূলে আঘাত করে তবে খুলনা ও বরিশালের উপকূলবর্তী নিচু এলাকা কয়েক ফুট জলোচ্ছ¡াসে প্লাবিত হতে পারে। এবং প্রায় সারাদেশেই বেশ ভালো বৃষ্টিপাত সংগঠিত হতে পারে।
সম্ভাবনা ২ : আবার যদি এটি উড়িষ্যা থেকে কলকাতার আশেপাশে ল্যান্ডফল করে তবে এর একটা আউটার কনভারজেন্স জোন হিসেবে চট্টগ্রাম ও বরিশালে ভালো বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে। অপরদিকে খুলনা অঞ্চলে সাইক্লোনের প্রভাব সরাসরি পড়তে পারে। আর দূরবর্তী প্রভাবের কারণে একটা দুর্বল প্রভাব সারা দেশেই বিদ্যমান থাকতে পারে। যার ফলে বর্ষাকালের মত টিপ টিপ বৃষ্টি হতে পারে।
সম্ভাবনা ৩ : যদি এটি বরিশাল-চট্টগ্রামের মাঝামাঝি অঞ্চল দিয়ে ল্যান্ডফল করে তবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাশাপাশি সারাদেশেই ভালো বৃষ্টিপাত পেতে পারে। শুধু ব্যতিক্রম হিসেবে রংপুর বিভাগে কিছুটা কম বৃষ্টি হবে।
সম্ভাবনা ৪ : যদি চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফের মাঝে দিয়ে অতিক্রম করে তবে বরিশালের দক্ষিণাঞ্চল থেকে পুরো চট্টগ্রাম বিভাগ বৃষ্টিপাতের সম্মুখীন হতে পারে।
সম্ভাবনা ৫ : যদি এটি মায়ানমারে যায় তবে একমাত্র চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চল ব্যতীত আর কোথাও বৃষ্টিপাত হবে না।
এই আবহাওয়া গবেষক আরও মনে করেন, সিস্টেম যত বেশি শক্তিশালী হয় তত এটি কেন্দ্রের দিকে সংকুচিত হয়। ফলে আশপাশে মেঘের ব্যাসার্ধ কমে যায়। অপরদিকে যত কম শক্তিশালী হয় মেঘ তত দূরে ছড়ানো ছিটানো থাকে যা একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে।