দেশের তথ্য ডেস্ক।।
ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ব্যর্থ হওয়া বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে ব্রিটিশ সরকারের একটি সমঝোতা হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তির আওতায় এই বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ সরকারের ইলিগ্যাল মাইগ্রেশন মিনিস্টার মাইকেল টমলিনসন বলেন, বাংলাদেশের সাথে ব্রিটেনের দীর্ঘ অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া রয়েছে। এসবের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই বাংলাদেশ ব্যর্থ এ্যাসাইলাম আবেদনকারীদের ফেরত নেবে।
অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো সহজ করতে ১৬ মে বাংলাদেশের সঙ্গে এ নতুন চুক্তি করেছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেন। লন্ডনে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক প্রথম যৌথ ইউকে-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপের উভয় পক্ষ রিটার্ন চুক্তির বিষয়ে সম্মত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে বৈঠকটি নেতৃত্ব দেন ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। বৈঠকে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
উভয় দেশ পারস্পরিক অংশীদারিত্বের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়ে সহযোগিতার ব্যাপারে জোরালো অঙ্গীকার করে। ব্রিটিশ সরকারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্টুডেন্ট ও অন্যান্য ভিসায় আসা ১১ হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে প্রবেশের এক বছরের মধ্যে ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য রাজনৈতিক আশ্রয় দাবি করেন। এরমধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের আবেদন গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
বাকি ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আবেদন খারিজ হওয়া এসব আশ্রয়প্রার্থীসহ দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটেনে অবৈধভাবে আছেন এমন বাংলাদেশি অভিবাসীদের ধরে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত রেকর্ড ২১ হাজার ৫২৫ জন ভিসাধারী যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদন করেন যা আগের বছরের তুলনায় ১৫৪ শতাংশ বেশি।
এতে আরও বলা হয়, ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর আশ্রয় প্রার্থীর শীর্ষে রয়েছে আফগানিস্থান, পাকিস্তান, এরপরের অবস্থানে আছে বাংলাদেশ, ভারত ও নাইজেরিয়া। গত বছর যুক্তরাজ্য থেকে বিভিন্ন দেশের ২৬ হাজার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিটেনে থাকা অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। এ কারণে ব্রিটেনে বর্তমানে অবৈধ বাংলাদেশিদের সংখ্যা অনেক কম। খুশির খবর হচ্ছে ব্রিটেনে অবৈধদের তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে নেই। ব্রেক্সিটের পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ায় আবারো নতুন করে ব্রিটেনের সাথে এ বিষয়ে চুক্তি সম্পন্ন হলো।
এদিকে ব্রিটেনে অবৈধ অভিবাসী ধরার জন্য হোম অফিস প্রতিদিন রেইড দিচ্ছে। অবৈধভাবে ব্রিটেনে বসবাসকারীদের ঠেকাতে তাদের আটক করে রোয়ান্ডায় পাঠানোর আইন পাশ হয়েছে পার্লামেন্টে। এতে অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। কারণ জনবহুল রাস্তায় ফেসিয়াল রিকগনিশন ক্যামেরা বসিয়ে ধরা হচ্ছে তাদের। এছাড়া বাসা বাড়ি ছাড়া বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে রেইড দিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের আটক বেড়ে গিয়েছে।