দেশের তথ্য ডেস্ক।।
গত বছর জোনাল দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে সরাসরি মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়ার জন্য মনোনীত হন জান্নাতুল ফেরদৌস। তার আগেই জাতীয় মহিলা দাবার মুকুট জিতেছেন মাত্র ১৬ বছর বয়সে। এবার তাঁর আইএম হওয়া মানে রানী হামিদ, শামিমা আক্তার ও শারমিন সুলতানার সঙ্গে দেশের নারী দাবাড়ুদের মর্যাদার ছোট্ট ব্র্যাকেটে যুক্ত হওয়া।
সেই জান্নাতুলকে নিয়েই কিনা এখন নানামুখী সমালোচনা! জোনাল দাবায় আইএম খেতাবের জন্য মনোনীত হলেও নামের পাশে সেই খেতাব যুক্ত করতে ২০০০ রেটিং পূর্ণ করার শর্তও আছে তাঁর।
জান্নাতুল সর্বশেষ মানহাস ক্যাসলের আয়োজনে যে দুটি রেটিং টুর্নামেন্টে খেলেছেন, সে সময় তাঁর সেই শর্ত পূরণ করতে আর মাত্র ৪৫ রেটিং প্রয়োজন ছিল। তাতে তিনি সে টুর্নামেন্ট দুটিতে যেভাবে খেলেছেন, তাতে প্রশ্ন উঠে গেছে সেই রেটিং অর্জনে তিনি কোনো ‘অসদুপায়’ অবলম্বন করেছেন কি না। টুর্নামেন্টগুলোতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ ঠিক হয়।
তবে প্রথম রাউন্ডে সেই নিয়ম মেনে তালিকার সবার প্রতিপক্ষ ঠিক হয়ে যাওয়ার পর শেষ মুহূর্তে আরো কেউ যোগ হলে তাঁদের ‘ম্যানুয়ালি’ প্রতিপক্ষ ঠিক করে দেওয়ার সুযোগ আছে।
মানহাস ক্যাসলের টুর্নামেন্টে জান্নাতুল সবার শেষে এসে তেমনি পছন্দের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলেছেন বলে অভিযোগ। সেই খেলায় জিতেছেনও তিনি। পরের দুই রাউন্ডে আবার ওয়াকওভার দেন তিনি। খেলেন চতুর্থ রাউন্ডে।
সেই ম্যাচটি জেতার পর আর খেলেননি জান্নাতুল।
জান্নাতুল নিজেই স্বীকার করেছেন, ‘যে ম্যাচগুলোতে আমি জিতব মনে করেছি, আমার রেটিং বাড়বে, সেগুলোই খেলেছি। এটা তো হতেই পারে।’ কিন্তু তাঁর এই কৌশল অনেকে মানতে পারেননি। পছন্দ অনুযায়ী ম্যাচগুলোতে প্রতিপক্ষ তাঁকে ছাড় দিয়েছে কি না, সেই অভিযোগও উঠেছে।
দাবাড় বৈশ্বিক সংস্থা ফিদেতে সেই অভিযোগ গেছে। সেখান থেকে জান্নাতুলের খেলা গেমগুলোর তথ্য চেয়ে নেওয়া হয়েছে। সেগুলো পর্যালোচনা করেই তাঁর অর্জিত রেটিংয়ের অনুমোদন দেওয়া হবে।
দাবা কোচ আবু সুফিয়ান সমালোচনা করেছেন তাঁর রেটিং বাড়ানোর ‘শর্টকাট’ প্রবণতার, ‘ও যেভাবে খেলেছে সেটা যে কারো চোখেই দৃষ্টিকটু ঠেকবে। কেউ অন্য রকম কিছু এখানে সন্দেহ করলে দোষ দেওয়া যাবে না। আমার কথা হলো, ও ভালো দাবাড়ু, ভালো খেলেই জোনাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে আইএম হয়েছে। ওর তাহলে কিসের এত তাড়া! অনুশীলন করে নিজের খেলাটা আরো ভালো করে রেটিং বাড়িয়ে নিক না। এভাবে না খেলে রেটিং বাড়ানোর চিন্তা বৃহত্তর অর্থে দাবার জন্যই ক্ষতিকর। অন্যরাও এটা অনুসরণ শুরু করবে।’