নিজের কিডনি হারিয়ে বিক্রির চক্র গড়ে তোলেন আতাহার

13-9.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক।।

একটি চক্রের ফাঁদে পড়ে নিজের কিডনি হারিয়েছেন বাগেরহাটের আতাহার হোসেন বাপ্পি। চাকরি দেওয়ার কথা বলে চক্রটি তাঁকে ভারতে নিয়ে একটি কিডনি দিতে বাধ্য করে। এরপর দেশে ফিরে আতাহার নিজেই কিডনি বেচাকেনার চক্র গড়ে তোলেন। এ কথা জানিয়েছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা।

মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভনে আতাহার ভারতে নিতেন মূলত নিম্ন আয়ের লোকজনকে। সেখানে নিয়ে তাদের বাধ্য করা হতো একটি কিডনি বেচতে। সেই কিডনি প্রতিস্থাপন হতো বাংলাদেশি রোগীর শরীরে। দেশে থাকতেই সব ঠিকঠাক করতেন আতাহার। এমনকি হাসপাতালও ঠিক করা হতো।

কিডনি বেচাকেনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আতাহার সোমবার ঢাকার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুরের দর্জি রবিন খানকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভারতে নিয়ে তাঁর একটি কিডনি কেটে নেয় আতাহারের চক্র। এ ঘটনায় আতাহারসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন, রাজু হাওলাদার, শাহেদ উদ্দিন ও আল আমিন। এর মধ্যে আতাহার, রাজু ও শাহেদকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা কিডনি বিক্রির বিষয়ে নানা তথ্য দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহজাহান মণ্ডল সমকালকে বলেন, ‘গতকাল চারজনকেই আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মধ্যে আতাহার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।’

পুলিশ জানায়, আতাহারের বাড়ি বাগেরহাট সদরের হরিনখানায়। ৪-৫ বছর আগে কিডনি বিক্রি চক্রের ফাঁদে পড়েন তিনি। চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভারতে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁর একটি কিডনি নেয় চক্রটি। তারা ৫০ লাখ টাকায় সেই কিডনি বিক্রি করলেও তাঁকে দেওয়া হয় ৩ লাখ টাকা। পরে তিনি জানতে পারেন এক বাংলাদেশি রোগীর শরীরে তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে। এরপর দেশে ফিরে কিডনি বিক্রির চক্র গড়ে তোলেন আতাহার। চক্রে আছে ১০-১২ জন। দু’জন থাকেন ভারতে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশের রোগীর কাছে কিডনি বিক্রি করেন। তবে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় ভারতে। বাংলাদেশে থেকে সবকিছু চূড়ান্ত করা হয়।

আতাহার ১০-১২ জনকে ভারতে নিয়ে তাদের শরীর থেকে কিডনি নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই টাকায় বাগেরহাটে একটি বাড়ি বানিয়েছেন তিনি। গত ডিসেম্বরে মিরপুরের দর্জি রবিনকে ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির প্রস্তাব দিয়ে ভারতে নিয়ে যায় চক্রটি। সেখানে পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁর একটি কিডনি বিক্রি করে দেয় তারা। বিনিময়ে তিন লাখ টাকা দেওয়া হয় তাঁকে। গত ১৯ মার্চ দেশে ফেরার পর বিষয়টি ধানমন্ডি থানা পুলিশকে জানান রবিন। এ ঘটনায় একটি মামলাও করেন।

Share this post

PinIt
scroll to top