দেশের তথ্য ডেস্ক।।
পৃথিবীতে আঘাত হেনেছে সৌরঝড়। সৌরঝড়ের কারণে স্যাটেলাইট ও বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গত দুই দশকের মধ্যে পৃথিবীতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরঝড় এটি। আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রিপোর্ট অনুযায়ী, সূর্য তার ১১ বছরের দীর্ঘ সৌরচক্র অতিক্রম করছে।
এই কারণে করোনাল ম্যাস ইজেকশন এবং সোলার ফ্লেয়ার সূর্যের মধ্যে ঘটছে। সেপ্টেম্বর ২০১৭-এর পর এখন পর্যন্ত সূর্যের মধ্যে সবচেয়ে বড় সৌরশিখা দেখা গেছে।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে কোরোনাল মাস ইজেকশন পৃথিবীতে আঘাত হানে। ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ)- এর স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার জানিয়েছে, সূর্য যখন প্রচুর পরিমাণ শক্তি উগরে দেয় বা নির্গত করে, ঠিক সেই সময়ে এই রকম ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের সৃষ্টি হয়।
সূর্যের বাইরের বায়ুমণ্ডল থেকে চুম্বকীয় প্লাজমার বড় অগ্ন্যুৎপাত এটি। পরে এটি জিওম্যাগনেটিক স্টর্মে পরিণত হয়।
এ সৌরঝড়ের কারণে উত্তর ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়াতে অরোরা বা মেরুজ্যোতি দেখা গেছে। নর্দার্ন লাইট বা অরোরা সূর্যের চার্জযুক্ত কণার কারণে ঘটে।
পৃথিবীতে প্রবেশ করার সময় এই কণাগুলো অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনের মতো গ্যাসের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত, যার কারণে আকাশে সবুজ, হলুদ, লাল ও কমলা আলো দেখা যায়। নর্দার্ন লাইট সাধারণত মাটি থেকে ৮০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার উচ্চতায় দেখা যায়।
ফটোগ্রাফার শন ও’ রিওর্ডান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, আজ ভোর ৪টায় তাসমানিয়ায় একেবারে বাইবেলে বর্ণিত আকাশ দেখা গেছে। আমি আজ চলে যাচ্ছি। এই সুযোগ হাতছাড়া হলো না।
স্যাটেলাইট অপারেটর, এয়ারলাইনস এবং পাওয়ার গ্রিডকে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য ব্যাঘাতের জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সৌর ঝড়ের কারণে স্যাটেলাইটে শর্ট সার্কিট হয়। পাওয়ার গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব কারণে মহাকাশচারীদের জীবনও হুমকির মুখে পড়তে পারে। এদিকে পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া ঘটিয়ে বিঘ্ন ঘটাতে পারে বিদ্যুৎ পরিষেবাসহ কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও। মহাকাশযানও উচ্চ মাত্রার বিকিরণের ঝুঁকিতে রয়েছে, যদিও বায়ুমণ্ডল এটিকে পৃথিবীতে পৌঁছাতে বাধা দেয়।
নাসার একটি নিবেদিত দল রয়েছে, যা মহাকাশচারীর নিরাপত্তার দিকে নজর রাখছে এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা মহাকাশচারীদের ফাঁড়ির মধ্যে এমন জায়গায় যেতে বলতে পারে, যেগুলো আরো ভালোভাবে সুরক্ষিত।