দেশের তথ্য ডেস্ক।।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুরো ভারতে ম্যারাথন নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। কিন্তু ১৯৯৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কাশ্মীরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। যেখানে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে ৩৫ বছর ধরে বিদ্রোহ চলছে এবং এতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
বিজেপির পরিবর্তে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটির তিনটি আসনে স্থানীয় দলগুলো নির্বাচনী লড়াই লড়বে।
স্থানীয় প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বি শক্তিশালী দল হল, ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)।’ তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও উভয় দলই বলেছে, তারা হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপির বিরোধী এবং কংগ্রেস দলের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের সঙ্গে জোট করবে।
বিশ্লেষকসহ বিরোধী দলগুলো বলছেন, একটি কারণে বিজেপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তা হলো, নির্বাচনের ফলাফল সম্ভবত মোদির শান্তিপূর্ণ এবং আরো সমন্বিত কাশ্মীর গড়ার বিরোধিতা করবে।
কারণ ২০১৯ সালে বিতর্কিত কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্তশাসন রদ করে তিনি কাশ্মীরকে নয়াদিল্লির নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। বিজেপি ও তার মিত্ররা ভারতের প্রতিটি অংশে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এবং বিজেপির হিন্দুত্ববাদের কারণে সংসদের ৫৪৩ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা জেতার সম্ভবনা রয়েছে।
‘তারা (বিজেপি) নির্বাচনে অনুপস্থিত কেন?’ ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা এবং জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কাশ্মীরের প্রধান শহর শ্রীনগরে নিজের বাড়িতে বসে তিনি এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বিজেপি যা করেছে বলে দাবি করে, বাস্তবে সেখানে একটি স্পষ্ট ব্যবধান আছে।
’মোদি বলেছেন, ২০১৯ সালে তার বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে কয়েক দশক ধরে চলা রক্তপাত বন্ধ এবং পর কাশ্মীরে স্বাভাবিকতা ফিরে এসছে। তিনি দ্রুত এই অঞ্চলে বিনিয়োগ ও চাকরির ব্যবস্থা করবেন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেন, সরকারের এই বিষয়গুলো কাশ্মীরি যুবকরা সমর্থন করেছে, ফলে নিরাপত্তা বাহিনীকে নিক্ষেপ করা পাথরের বদলে তাদের হাতে এখন ল্যাপটপ আছে।
২০১৯ সালে মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বাধীন সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা রদ করে, তাদের পৃথক সংবিধান বাতিল করে। এই অঞ্চলকে দুটি ফেডারেল ভূখণ্ডে ভাগ করেন।
সেগুলা হল, হিন্দু-অধ্যুষিত জম্মু সমভূমিসহ মুসলিম-অধ্যুষিত কাশ্মীর উপত্যকা এবং পার্বত্য বৌদ্ধ অধ্যুষিত লাদাখ। সরকার সেই সময় কাশ্মীরে কঠোর লকডাউন চাপিয়েছিল এবং আবদুল্লাসহ অন্যান্য প্রায় সকল স্থানীয় নেতাকে কয়েক মাস ধরে তাদের হেফাজতে রেখেছিল।
বিজেপির কাশ্মীর বিভাগের প্রধান রবিন্দর রায়না বলেছেন, নির্বাচন এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি দলের একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ ছিল। যদিও তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কারণ বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘বিজেপি সেখানে নির্বাচনী লড়াই করবে না। তবে এমন প্রার্থীকে সমর্থন করবে যে শান্তি, সুখ, ভ্রাতৃত্ব এবং গণতন্ত্রের জন্য কাজ করবে।’ কিন্তু বিজেপি এখনও ঘোষণা করেনি যে, অনেক ছোট দলের মধ্যে তারা কোন দলকে সমর্থন করবে।