বাংলাদেশের বোলিং অবশেষে কি পূর্ণতা পেল ?

4.png

দেশের তথ্য ডেস্ক।।

একটি দলের পরিপূর্ণ বোলিং লাইনআপ কেমন হয়? পেসার, পেস বোলিং অলরাউন্ডার, অফ স্পিনার এবং লেগ স্পিনার—এই তো? যে রকম হলে বোলিং আক্রমণটা বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়। এর সঙ্গে যোগ করতে পারেন একজন বাঁহাতি স্পিনার। যেকোনো দলের জন্য সোনায় সোহাগা বোলিং লাইনআপই বলা যায়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গতকাল প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের একাদশ দেখে কি এমন কিছুই মনে ঘুরপাক খেয়েছে? তাহলে সেই ভাবনাটা অমূলক নয়।

হ্যাঁ, একজন বাঁহাতি স্পিনারের অভাব ছিল।
কিন্তু ১৫ জনের স্কোয়াডে বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে তানভীর ইসলাম তো ছিলেনই। কম্বিনেশনের কারণে হয়তো একাদশে তাঁর জায়গা হয়নি। সাকিব আল হাসান ফিরলে অবশ্য এই চিন্তায়ও যাওয়া লাগবে না।

যেকোনো কম্বিনেশনে বাঁহাতি স্পিনার ও ব্যাটার হিসেবে তিনি একাদশে থাকবেন। আর এমনিতেও বাংলাদেশ দলে কোনো কালে বাঁহাতি স্পিনারের সংকট ছিল না। সাকিব, তাইজুল, নাসুম ও তানভীররা তো সেই ব্যাটনই বয়ে নিচ্ছেন। অভাবটা ছিল কেবল একজন করে লেগ স্পিনার ও পেস বোলিং অলরাউন্ডারের।

বছরের পর বছর একজন লেগ স্পিনারের জন্য তীর্থের কাক হয়ে থেকেছে বাংলাদেশ। অলক কাপালি, জুবায়ের হোসেন লিখন হয়ে তানভীর হায়দার, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব—এঁদের কেউই আসলে লেগ স্পিনারের অভাব মেটাতে পারেননি। কেউ থিতু হতে পারেননি। শুরুতে ঝলক দেখালেও থিতু হতে পারেননি কেউ। একাদশে একজন লেগ স্পিনারের জন্য হাহাকার মেটানোর চেষ্টার সর্বশেষ উদাহরণ রিশাদ হোসেন।

এখন পর্যন্ত অন্যদের তুলনায় তাঁকে একটু ব্যতিক্রম বলাই যায়। রিশাদ নিজেই সেটির প্রমাণ দিয়ে চলেছেন।
চট্টগ্রামে গত মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর টি-টোয়েন্টি অভিষেক। এখন পর্যন্ত ১০টি ম্যাচ খেলেছেন। উইকেট নিয়েছেন ছয়টি। সর্বশেষ ম্যাচটি গতকাল। যদিও চার ওভার বোলিং করে ৩৭ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। গত ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে ওয়ানডে দলেও ঢুকে পড়েছেন রিশাদ। রিশাদের ব্যাটিংয়ের হাতটাও ভালো। বড় শট খেলার সামর্থ্যের জন্য খুব দ্রুতই দলে জায়গা পোক্তও করেছেন। এখন তাঁর শুধুই সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা।

এবার আসা যাক পেস বোলিং অলরাউন্ডারের কাছে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে দিয়ে এই ফাঁকা জায়গাটা পূরণের চেষ্টা অনেক দিনের। কিন্তু তিনি যে থেকেও থাকেন না! চোট তাঁর নিত্য সঙ্গী। গতকাল বাংলাদেশ একাদশে ফিরেছেন দীর্ঘ ১৮ মাসের বিরতির পর। সর্বশেষ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন হ্যাগলি ওভালে, ২০২২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। লম্বা বিরতির পর গতকাল সাইফউদ্দিনের প্রত্যাবর্তনটা হয়েছে মনে রাখার মতো। পঞ্চম ওভারে প্রথমবার তাঁর হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। চার ওভারের কোটা পূরণ করে ১৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়ে ফেরা যেমন রাঙিয়েছেন, তেমনি তাঁর ওপর রাখা আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন।

আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যখন শুরুর অপেক্ষায়, তখন সাইফউদ্দিনের এভাবে ফেরা বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য চিন্তামুক্তির কারণও হতে পারে। সাইফউদ্দিনের অন্তর্ভুক্তি যে বোলিং বিভাগে বৈচিত্র্যের সঙ্গে পূর্ণতাও এনে দিচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। দল ঘোষণার সময় এ জন্যই নির্বাচক প্যানেলের সদস্য হান্নান সরকার বলেছিলেন, ‘স্পিনে আমরা বৈচিত্র্য রাখার চেষ্টা করেছি। ডানহাতি অফ স্পিনার ও বাঁহাতি লেগ স্পিনার। এর সঙ্গে চারজন পেসার রয়েছে। এর মধ্যে সাইফউদ্দিনের নাম রয়েছে। সাইফউদ্দিনকে আমরা অলরাউন্ডার হিসেবে বিবেচনা করি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে তাকে সেভাবেই খেলানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’ বোলিং বিভাগে বাংলাদেশের এমন পূর্ণতার অপেক্ষা তো অনেক দিনের।

 

Share this post

PinIt
scroll to top