বিশ্বে বাধ্যতামূলক শ্রমের ৫৫ শতাংশ নারী – মহান মে দিবস

.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক।।  বিশ্বজুড়ে বাধ্যতামূলক শ্রম দিচ্ছে দুই কোটি ৯ লাখ মানুষ। যারা শ্রম বা যৌন শোষণের জন্য পাচার হয়েছে, কিংবা দাসের মতো পরিস্থিতিতে রয়েছে, এদের মধ্যে ৫৫ শতাংশই হচ্ছে মেয়ে বা নারী। বাকি ৪৫ শতাংশ ছেলে বা পুরুষ।

এতে বলা হয়, বাধ্যতামূলক শ্রমে শিশুদের চেয়ে বয়সীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বিশ্বজুড়ে ১৮ বছরের কম বয়সী ৫৫ লাখ বা ২৬ শতাংশ শিশু বাধ্যতামূলক শ্রমে ব্যবহার হচ্ছে। এক কোটি ৫৪ লাখ বা ৭৪ শতাংশের বয়স ১৮ বা তার বেশি। বাধ্যশ্রমের এক কোটি ৮৭ লাখ বা ৯০ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক বেসরকারি খাতে।

এর মধ্যে ৪৫ লাখ বা ২২ শতাংশ যৌন শোষণের শিকার। এক কোটি ৪২ লাখ বা ৬৮ শতাংশ মানুষ অন্যান্য খাতে বাধ্যতামূলক শ্রমে ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে কৃষি, নির্মাণ, গৃহস্থালিকাজ, শিল্পোৎপাদন খাত, খনি এবং জন-উপযোগমূলক সেবা রয়েছে। বাকি ২২ লাখ বা ১০ শতাংশ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাধ্যতামূলক শ্রম দিচ্ছে।

বিশ্বের কোন অঞ্চলে কত মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রম দেয়, সেই হিসাবও দেখিয়েছে আইএলও। তাতে দেখা যায়, সবার আগে রয়েছে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলো। ২০২২ সালে এই দুটি অঞ্চলের এক কোটি ৪৫ লাখ মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রম দিত। আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোয় এই সংখ্যা ছিল ৩৮ লাখ, আমেরিকা অঞ্চলের দেশগুলোয় ৩৬ লাখ, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোয় ৪১ লাখ। এ ছাড়া আরব দেশগুলোতে ৯ লাখ মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রম দেয়।

আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে এই বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে সৃষ্ট বার্ষিক মুনাফার পরিমাণ ২৩৬ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০১৪ সালের পর এই বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে সৃষ্ট মুনাফার পরিমাণ ৬৪ বিলিয়ন বা ছয় হাজার ৪০০ কোটি ডলার বা ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে সৃষ্ট মুনাফা এভাবে নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো, বাধ্যতামূলক শ্রমে নিযুক্ত মানুষের সংখ্যা এবং এই বাধ্যতামূলক শ্রমের শিকার মানুষপ্রতি মুনাফা বেড়েছে।

সারা পৃথিবীতে বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে যে অবৈধ মুনাফা অর্জিত হয়ে থাকে তার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোয়। এর পেছনেই রয়েছে আমেরিকা অঞ্চল। আইএলওর প্রতিবেদন অনুসারে বিশ্বে প্রতিবছর বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে বছরে ২৩৬.৬০ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের মুনাফা অর্জিত হয়। এর মধ্যে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলো অর্জন করে সর্বোচ্চ ৮৪.২ বিলিয়ন বা আট হাজার ৪২০ কোটি মার্কিন ডলার। এর পরের অবস্থানে থাকা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এ ধরনের মুনাফা অর্জিত হয় ৬২.৪ বিলিয়ন বা ছয় হাজার ২৪০ কোটি ডলার।

আমেরিকা অঞ্চলে এই মুনাফার পরিমাণ এখন ৫২.১ বিলিয়ন বা পাঁচ হাজার ২১০ কোটি ডলার। আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলো বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে ১৯.৮ বিলিয়ন বা এক হাজার ৯৮০ কোটি ডলার এবং মধ্যপ্রাচ্য তথা আরব দেশগুলো ১৮ বিলিয়ন বা এক হাজার ৮০০ কোটি ডলার মুনাফা করে থাকে।

 

Share this post

PinIt
scroll to top