দেশের তথ্য ডেস্ক|| খুলনা আর্ট স্কুলের আয়োজনে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উপলক্ষে ‘রুপবানের বনবাস’ নামক নাট্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা মহোদয় উপস্থিত ছিলেন।
কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মহোদয় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “যদিও আমরা দেখি স্বৈরাচার বিরোধী নাটক কিন্তু ভাষা আন্দোলনের পরপরই ইংরেজ শাসনামলে নীল চাষ বিরোধী বিভিন্ন নাটক দেশপ্রেমে প্রথম উদ্বুদ্ধ করেছিলো। প্রকৃতপক্ষে এই ভূখণ্ডে প্রথমবারের মতো মঞ্চ নাটকের স্বপ্নদ্রষ্টা মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং যার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মঞ্চে নাটক পরিবেশন হয়। এছাড়াও নাগরিক থিয়েটারের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলো। তাঁদের মধ্যে নাসির উদ্দিন ইউসুফ, সেলিম আল দ্বীন স্বাধীনতার পরবর্তীতে নাট্যব্যক্তিত্ব জনাব মামুনুর রশিদের নেতৃত্বে ঢাকা থিয়েটার গড়ে তোলে। আসলে নাটক হচ্ছে এমন একটা জিনিস যেটি জীবন ও জগতের কথা বলে। আমাদের স্কুল-কলেজগুলোতে সাংস্কৃতিক চর্চা আমরা করতে পারছি না। আমাদের সময় দেখা যেত বৃহস্পতিবার দিনে গান, কবিতা, নাটক এবং টিফিন পিরিয়ডে খেলাধুলা হতো। বর্তমানে ছেলেমেয়েরা ফোনে আবদ্ধ হয়ে গেছে। এজন্য আমাদের এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থা করতে হবে। সুষ্ঠ ও সাংস্কৃতিক চর্চা সেই সব অঙ্গনগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।
আর্ট স্কুলের উদ্যোগে মঞ্চ নাটক ‘রুপবানের বনবাস’ এই সংস্কৃতির বন্ধন জাতিকে জাগিয়ে তোলার জন্য সকল ধরনের মৌলবাদ সাম্প্রদায়িকতা থেকে দূরে রেখে সন্তানদের চোরাবালি থেকে কাটিয়ে উঠে সুষ্ঠু একটি জাতি গঠনের যে প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। এই মঞ্চ নাটকের সাথে যারা যারা জড়িত আছে প্রত্যেককে আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আশা করি আমরা সংখ্যায় কম হলেও আস্তে আস্তে সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলবো খুলনায় যার ফলে আমাদের সন্তানেরা মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসবে তারা নিশ্চিতভাবে কিশোর গ্যাং কালচার থেকে বেরিয়ে আসবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ নর-নারী রক্ত দিয়েছিল এবং ০২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ে উঠেছিল। সেই আরাধ্য সোনার বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে যাবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে বক্তব্য সমাপ্ত করছি।”
উক্ত মঞ্চ নাটক ‘রুপবানের বনবাস’ উপস্থাপনে খুলনা আর্ট স্কুলের পরিচালক জনাব বিধান চন্দ্র রায় সভাপতিত্ব করেন।এ সময় খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) জনাব মোহাম্মদ ফিরোজ শাহ্; খুলনা মেডিকেল কলেজের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ এস. এম দিদারুল আলম; খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমির জেলা কালচারাল অফিসার জনাব সুজিত কুমার সাহা; ২০২২ সালের বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদোৎসাহি সমাজসেবী ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক সংগঠক জনাব মাসুদ মাহমুদ এবং আলোচক হিসেবে নাট্য ব্যক্তিত্ব জনাব এ.কে.এম আলাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।