আপনি কি প্রতিদিন সকালে পেটের কোনো না কোনো সমস্যা নিয়ে ঘুম থেকে উঠছেন? পেট ফাঁপা, বদহজম এবং বুকজ্বালা কি আপনাকে সারাদিন অস্থির করে রাখে? স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরেও কি আপনার হজমের সমস্যা রাতে বেড়ে যায়? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে কিছু বিষয় আপনার জন্য জানা জরুরি। জীবনধারায় একটি মৌলিক পরিবর্তন আমাদের সমস্ত হজম এবং বিপাক সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে। ভাবছেন, সেটি কী? পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রার মতে, এটি আমাদের রাতের খাবারের সময়।
পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা ব্যাখ্যা করেছেন, আপনার খাবারের সময় ঠিক না করে কখনোই হজম ঠিক করতে পারবেন না। তার মতে, আপনি কখন খাচ্ছেন তা ততটাই গুরুত্বপূর্ণ, যতটা গুরুত্বপূর্ণ আপনি কী খাচ্ছেন। পুষ্টিবিদ বলছেন যে আপনার শরীর কখন খাবার খাবে তা বুঝতে না পারলে পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদির মতো সমস্যা বেড়ে যায়।
রাতের খাবার খাওয়ার সঠিক সময় কখন?
পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা বলেছেন যে, ঘুমের অন্তত তিন ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি হজমের সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান পেতে চান তাহলে আমি একটি মৌলিক পরিবর্তনের সঙ্গে শুরু করার পরামর্শ দেবো। সেটি হলো আপনার খাবারের সময় ঠিক করুন এবং জেনে নিন রাতের খাবার খাওয়ার সঠিক সময় কখন।’ প্রতিদিন একই সময়ে রাতের খাবার খেলে এই উপকারগুলো পাবেন-
১. হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করে
একটি নির্দিষ্ট সময়ে আপনার প্রতিদিনের রাতের খাবার খাওয়ার অভ্যাস করলে তা ধীরে ধীরে পেট ফুলে যাওয়া, গ্যাস এবং অস্বস্তির মতো সমস্যাগুলো কমাতে সাহায্য করবে। সেইসঙ্গে এটি সামগ্রিক অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করবে।
২. পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়
বিছানায় যাওয়ার কমপক্ষে তিন ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেলে তা আপনার শরীরকে খাবার হজম করার জন্য যথেষ্ট সময় দেয়, এতে পুষ্টি শোষণের ক্ষমতা বাড়ে। অন্য কথায়, এটি নিশ্চিত করে যে আপনার শরীর বিশ্রামের সময় ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য পুষ্টিকে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারে।
৩. অন্ত্রের স্বাস্থ্যের সাহায্য করে
বিশেষজ্ঞের মতে, প্রারম্ভিক রাতের খাবার অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে এবং ডাইসবায়োসিসের মতো হজমের ব্যাঘাতের ঝুঁকি হ্রাস করে অন্ত্রকে সুস্থ রাখে। খাবার পরিপাকতন্ত্রে দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকলে অন্ত্রে ডিসবায়োসিস ঘটে।
৪. মলত্যাগ নিয়ন্ত্রণ করে
আগেভাগে রাতের খাবার খেলে তা খাবারকে পরিপাকতন্ত্রের মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেয়। এটি অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যে কারণে মলত্যাগ করা সহজ হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূরে থাকে।
৫. অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি কমায়
নিয়মিত রাতের খাবারের রুটিন মেনে চললে তা আপনাকে নানাভাবে স্বস্তি দেবে। এই যেমন এটি অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আগেভাগে রাতের খাবার খেলে তা খাদ্যনালীতে পেটের অ্যাসিড প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনাকে আরও কমিয়ে দেয়, ফলে কোনো ধরনের অস্বস্তি বা জ্বালা সৃষ্টি হয় না।
দেশের তথ্য ডেস্ক –