চাঞ্চল্যকর বায়েজীদ হাসান হত্যা মামলার অন্যতম দুইজন পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬

WhatsApp-Image-2024-03-29-at-12.29.32-PM.jpeg

“বাংলাদেশ আমার অহংকার”এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণ প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত দীর্ঘদিনের পলাতক ও দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র‌্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

যশোর জেলার কোতয়ালী মডেল থানাধীন বড়বাজার এলাকায় জনৈক রফিকুলের চাউলের গোডাউন হতে গত ইং ২৫/০৩/২০২৪ তারিখ রাত আনুমানিক ০২.৩০ ঘটিকায় ভিকটিম এস এম বায়েজীদ হাসান (৩৪) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃংখলা বাহিনী। ঘটনার পরপরই অত্র এলাকার জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ঘটনার সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে তাৎক্ষণিক র‌্যাব-৬, যশোর ক্যাম্পের আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং ভিকটিমের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে। ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার বাসিন্দা। ভিকটিম একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যশোরের রফিকুল ইসলাম চৌধুরী @মুল্লুক চাঁন ও সঞ্জয় চৌধুরীর ঢাকাস্থ বসুন্ধরা আবাসিকের এম ব্লকে বিল্ডিং নির্মাণ প্রকল্পে চাকুরী করতো এবং সেখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করতো। গত ইং ২৪/০৩/২০২৪ তারিখ দুপুর আনুমানিক ১৩.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম নিজ বাড়ি খুলনায় থাকাকালীন রফিকুল ইসলাম চৌধুরী @ মুল্লুক চাঁন ও সঞ্জয় চৌধুরীদ্বয় ভিকটিমের নিকট টাকা পাবে অজুহাতে তাদের নির্দেশে কয়েকজন ব্যক্তি ভিকটিমকে জোরপূর্বক খুলনা হতে যশোরে তুলে নিয়ে যায়। ভিকটিমের মা আরো জানায়, ইং ২৫/০৩/২০২৪ তারিখ আনুমানিক রাত ২১.০০ ঘটিকার সময় রফিকুল ইসলাম চৌধুরী @ মুল্লুক চাঁন ভিকটিমের মায়ের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বলে যে, ‘‘ঢাকা বসুন্ধরা আবাসিকের কাজ করাকালীন সময় ভিকটিম বায়েজীদ হাসান তাদের ০৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা চুরি করেছে, সেই টাকা ফেরত দিয়ে আপনার ছেলেকে নিয়ে যান, অন্যথায় যতক্ষণ টাকা না দিবেন ততক্ষণ আপনার ছেলেকে মারধর করা হবে।’’ এ সময় ভিকটিমের সাথে তার মাকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেওয়া হয় এবং ভিকটিমকে শারীরিক নির্যাতন করায় ভিকটিমের ডাক চিৎকার মোবাইল ফোনে শুনতে পায়। পরবর্তীতে আইনশৃংখলা বাহিনী ভিকটিমের মৃত দেহ উদ্ধার করে পরিবারকে অবহিত করলে, ভিকটিমের মা বাদী হয়ে যশোর জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই র‌্যাব-৬, যশোর হত্যার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রাখে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৬, যশোর ক্যাম্প গোপন সূত্র ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ইং ২৭/০৩/২০২৪ তারিখ গভীর রাতে জানতে পারে যে, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার ৪নং এজাহারনামীয় আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ @ রাজু (৩৫) এবং ৫নং এজাহারনামীয় আসামী মোঃ আব্দুর রহমান ৥ রাজন (৩৪), ডিএমপি ঢাকার ভাটারা থানাধীন ঢালীবাড়ী এলাকায় আত্মগোপনে আছে। প্রাপ্ত তথ্যোর ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে র‌্যাব-৬, যশোর ক্যাম্প ও র‌্যাব-১, উত্তরার একটি যৌথ আভিযানিক দল ইং ২৮/০৩/২০২৪ তারিখ আনুমানিক ভোর ০৫.৪৫ ঘটিকার সময় উক্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বায়েজীদ হাসান হত্যা মামলার আসামী (১) মোঃ রাজু আহম্মেদ @ রাজু (৩৫) পিতা- আবুল হাশেম, সাং- গদখালী নবিনগর, থানা- ঝিকরগাছা, ও (২) মোঃ আব্দুর রহমান @ রাজন (৩৪) পিতা- মোঃ খাইরুল ইসলাম, সাং- লেবুতলা, থানা- কোতয়ালী মডেল, উভয় জেলা- যশোরদ্বয়’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এছাড়াও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে র‌্যাব-৬, যশোর এর অভিযান অব্যাহত থাকবে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী @মুল্লুক চাঁন ও সঞ্জয় চৌধুরীর নির্দেশে ঢাকা বসুন্ধরা আবাসিকের এম ব্লকে বিল্ডিং নির্মাণ প্রকল্পের কন্ট্রাক্টর মোঃ শহিদুল ইসলাম (৪৫) সহ অত্র মামলার অন্যান্য পলাতক আসামীরা গত ইং ২৪/০৩/২০২৪ তারিখে ভিকটিম বায়েজীদ হাসানের নিকট টাকা পাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ভিকটিমকে তার নিজ বাড়ি খুলনা থেকে তুলে নিয়ে আসে এবং যশোর বড়বাজারে অবস্থিত রফিকুল ইসলাম চৌধুরী @ মুল্লুক চাঁন এর চাউলের গোডাউনে আটকে রাখে। ভিকটিমকে উক্ত গোডাউনে আটক রেখে প্রধান আসামী রফিকুল ইসলাম চৌধুরী @ মুল্লুক চাঁন (৫৬), সঞ্জয় চৌধুরী (৫২) ও শহিদুল ইসলাম (৪৫) এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় সহ অন্যান্য আসামীরা মিলে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করে।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে যশোর জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

দেশের তথ্য ডেস্ক।।

Share this post

PinIt
scroll to top