বছরখানেক আগেই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। মেয়াদ পার হওয়ার পরও ঢাকার থানা, ওয়ার্ড কমিটি দিতে পারেনি মহানগরের দুই ইউনিট। দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় এর প্রভাব পড়েছে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। এখন আর আগের মতো নেতাকর্মী জড়ো করতে পারছে দলটি।
সংগঠনকে চাঙা করতে মহানগর দক্ষিণ ইতোমধ্যে থানা ও ওয়ার্ড কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন। আর মহানগর উত্তর থানা ও ওয়ার্ড কমিটি তালিকা প্রস্তুত করলে এখনো তা জমা দেয়নি। তবে ঈদের পর মহানগরের সকল থানা ও ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
জানা গেছে, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর সবশেষ সম্মেলন হয়েছিল। সেদিন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি এবং দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরের নাম ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটি ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়। ২০২২ সালের নভেম্বরে সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা এখন পর্যন্ত হয়নি।রাজনীতিতে ঢাকাকে হৃদপিণ্ড বলা হয়ে থাকে। ঢাকা যার দখলে থাকে, দেশও সেই রাজনৈতিক দলের হাতে থাকে। বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধীরা বড় ধরনের কর্মসূচি দিলে ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে নেতা-কর্মী নিয়ে আসতে হয়েছে বিগত কর্মসূচিতে। বিরোধী দলের হামলা-মামলা প্রতিহত করতে থানা ও ওয়ার্ডগুলোকে সক্রিয় করতে হবে। কমিটি দেবেন দেবেন বলে নেতাকর্মীদের ঘোরাবেন আর বার বার কর্মসূচি দেবেন, সেই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে কে? কর্মীদের এক সঙ্গে করে প্রোগ্রামে নিয়ে আসতে নেতৃত্ব লাগে, আর সেই নেতৃত্ব দিতে সময় নিলে তো সংগঠন ঝিমিয়ে পড়বে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অধীনে প্রায় ৮০০টি ইউনিট রয়েছে। ইউনিট কমিটি হলেও ৬৪ ওয়ার্ড ও ২৬ থানায় সম্মেলন করেও কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। দক্ষিণের ইউনিটগুলোতে প্রথমবারের মতো সম্মেলন করে কমিটি দেওয়া হয়েছে। তবে সম্মেলন হলেও কোনো ওয়ার্ড ও থানায় নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
সূত্র আরও জানায়, আসন্ন ঈদুল ফিতরের পরে মহানগরের থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো দেওয়া হবে। সে কারণে থানা ও ওয়ার্ডের পদপ্রত্যার্শীরা জোর লবিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মহানগর থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে লবিং করছেন। কেউ কেউ ইফতারের পর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা দিচ্ছেন, খোশগল্পে নিজের প্রার্থিতার খবরও সম্পাদকে শোনাচ্ছেন।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার নির্দেশ দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, সহযোগী সংগঠনসহ জেলা-উপজেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন খুব দ্রুত করতে হবে। তবে কোথাও পকেট কমিটি করা যাবে না। যারা ত্যাগী, তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে পকেট কমিটি করার অভিযোগ উঠবে, দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। যেসব জেলা-উপজেলার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তার সম্মেলন দ্রুত করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ বলেন, থানা ও ওয়ার্ড কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে। কমিটিগুলো ঘোষণা করা দরকার। কমিটি না হলে মিছিল-মিটিংয়ে লোকজন কম হয়। বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতাকর্মীর উপস্থিতি কম হয়। কমিটি না হওয়ার কারণে অনেকেই প্রোগ্রামে আসতে চায় না। নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে গেছে।
দেশের তথ্য ডেস্ক।।