স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনর আশ্বাসে দেশের ইন্টার্নি চিকিৎসকদের দেশব্যাপী কর্মবিরতি আন্দোলন স্থগিত করেছে ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার বিকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে দেশব্যাপী আন্দোলনরত ইন্টার্নি চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি দাবির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভা শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেন।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন মিটফোর্ড হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম।
ইন্টার্নি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি আন্দোলন প্রসঙ্গে সামন্ত লাল সেন বলেন, “ইন্টার্নি চিকিৎসকরাই একটি হাসপাতালের প্রাণ। তারা খেয়ে না খেয়ে হাসপাতালের রোগীদের সেবা করেন। সিনিয়র চিকিৎসকরা রাউন্ড দিয়ে চলে গেলে এই ইন্টার্নি চিকিৎসকরাই রোগীদের নানারকম অসুবিধাগুলোর দেখভাল করেন। কাজেই তাদের দাবীগুলোর যৌক্তিকতা বুঝে আমি নিজে ফাইল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলেছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফাইল গ্রহন করেছেন এবং অতি দ্রুত দেশের ইন্টার্নি চিকিৎসকদের জন্য ভাতা বৃদ্ধির সুরাহা করতে উদ্যোগ নেবেন বলেছেন। আমি ইন্টার্নি চিকিৎসকদের বলতে চাই, তারা আন্দোলন না করে চিকিৎসা শিক্ষার কাজে মনোযোগ দিন। প্রধানমন্ত্রী আপনাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। তিনি ফাইল গ্রহন করে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমরা দ্রুততম সময়ে আপনাদেরকে ভালো খবর দিতে সক্ষম হবো।”
এর আগে দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, অধ্যক্ষ, পরিচালকসহ পেশাজীবী চিকিৎসক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সভায় আলোচনা করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব ওয়াহেদুজ্জামান, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমইউ এর নবনিযুক্ত ভিসি ডা দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন চৌধুরী, স্বাচিপ মহাসচিব ডা. কামরুল হাসান মিলন, বিসিপিএস সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ্সহ অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ইন্টার্ণ চিকিৎসক পরিষদের নেতৃবৃন্দ তাদের দাবীগুলোর মধ্যে বর্তমানে ভাতা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা, প্রতি বছর এক হাজার টাকা করে ভাতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা রাখা, হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, চিকিৎসকদের ঝুঁকিভাতা রাখা, বকেয়া ভাতা পরিশোধ করাসহ অন্যান্য দাবীসমূহ তুলে ধরেন।
সভায় পেশাজীবী চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ ইন্টার্নি চিকিৎসকদের আন্দোলনে তুলে নিতে অনুরোধ করেন। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আন্দোলনরত ইন্টার্নি চিকিৎসকদের দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দিলে ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের নেতৃবৃন্দ একযোগে আন্দোলন প্রত্যাহারে একমত হন।
দেশের তথ্য ডেস্ক।।