ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর পিতৃ পরিচয় ডিএনএ টেস্টে নিশ্চিত হওয়ার পর আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। সেইসঙ্গে জন্ম নেওয়া শিশু সন্তানের ভরন–পোষণ দিতে বলা হয় ২১ বছর পর্যন্ত। তবে আসামি সেই রায় না মেনে আপিল করেন হাইকোর্টে। চান জামিনও। তবে শুনানিতে সন্তানের স্বীকৃতি ও সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি হলে মিলে জামিন।
দুই মাসের মধ্যে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার কথা ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২০ মার্চ) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহুরুল হকের বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য উঠে।আসাদুলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মাহফুজুল আলম মুন্না। এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল আজিজ মিয়া মিন্টু ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন।
আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, রংপুরের মিঠাপুকুরের আসাদুলের সঙ্গে তার চাচাতো বোনের প্রেমের একপর্যায়ে বিয়ের শর্তে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে গর্ভবতী হলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান আসাদুলবিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় ২০০৭ সালে ধর্ষণের মামলা করেন ভুক্তভোগী। পরে আদালতের নির্দেশে শিশুর পিতৃ পরিচয় নিশ্চিতে ডিএনএ টেস্ট করা হয়। তাতে জানা যায় ভুক্তভোগীর গর্ভে জন্ম নেওয়া ওই ছেলে শিশুর বাবা আসাদুল।
২০১৬ সালের রংপুরের বিচারিক আদালত ওই মামলায় রায় দেন। রায়ে আসাদুলকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে ২১ বছর পর্যন্ত জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণ–পোষণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। জন্ম নেওয়া শিশুটির বয়স এখন ১৫ বছর। এরপর সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন আসাদুল। চান জামিন। শুনানিতে সন্তানের স্বীকৃতি ও সম্পত্তি লিখে দেওয়ার কথা জানানো হয় আদালতকে। পরে হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন এবং সম্পত্তি লিখে দিতে নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আজ বুধবার শুনানির জন্য আসে।
ভোক্তভোগী নারীর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, উভয়পক্ষের আইনজীবী ও স্বজনের উপস্থিতিতে আজ বুধবার আদালত নির্দেশ দেন ৫ বিঘা জমি লিখে দিতে হবে। দলিল দাখিলের পর পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে।
তবে ভোক্তভোগী নারী দাবি করেন আসাদুলের সম্পত্তি আরও বেশি রয়েছে। পরে আদালত সিদ্ধান্ত দেন তার প্রাপ্ত সম্পত্তির অর্ধেক লিখে দিতে হবে। আর সম্পত্তি না লিখে দিলে তার জামিন বাতিল হবে। আর এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২১ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
দেশের তথ্য / আই এইচ