রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী

PM-Sheikh-Hasina-28022024-03.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক।।  জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বুধবার সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। তাই জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সব সময় সচেষ্ট। এ লক্ষ্যে সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সকল প্রকার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে আমরা ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিকে অনেকাংশে সংযত করতে পেরেছি। তবে, বিশ্ববাজারের কয়েকটি পণ্য যেমন জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, গম, সারসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হচ্ছে। আসন্ন রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণসহ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

শেখ হাসিনা জানান, আসন্ন পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে নিম্ন আয়ের মানুষের নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ ও দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীর ২৫টি স্পটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে সুলভ মূল্যে দুধ, মাংস ও ডিম বিক্রির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, পবিত্র রমজান উপলক্ষে আমদানি সংশ্লিষ্ট শুল্ক স্টেশনসমূহ ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, মসুর ডাল ও খেজুর দ্রুত খালাসকরণে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর/সংস্থা এবং ব্যবসায়ী নেতাদের অংশগ্রহণে সভাসমূহে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা, অভ্যন্তরীণ চাহিদা নির্ণয়, স্থানীয় উৎপাদন, মজুদ পরিস্থিতি, আমদানির পরিমাণ ইত্যাদি ধারাবাহিকভাবে পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম কর্তৃক ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার নিয়মিত ভাবে পরিদর্শন করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর মূল্য, মজুদ ও সরবরাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কোনরূপ অস্বাভাবিক অবস্থা/পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হলে সে সম্পর্কে তাৎক্ষণিক ভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়ে থাকে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার জন্য সারাদেশে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নেতৃত্বে জেলা ও উপজেলায় গঠিত জেলা-উপজেলা টাস্কফোর্স নিয়মিত সভা করে থাকে। ওই টাস্কফোর্স জেলা ও উপজেলা বাজারসমূহে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিরবচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে আমদানির এলসির সর্বনিম্ন মার্জিন গ্রহণসহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলার জন্য এবং প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহ রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সব ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছে।
অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, অসাধু ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে খাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রতিটি মিলের পাক্ষিক মিলিং ক্ষমতা ধানের ক্ষেত্রে পাঁচ গুণ থেকে কমিয়ে তিন গুণ করা হয়েছে। মজুত রাখার এ বিধান সংশোধন করায় বাজারে ধানের সরবরাহ বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে এবং অবৈধ মজুত রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। চালকল মালিক এবং খাদ্যশস্য ব্যবসায়ীদের গুদাম নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে। অটো রাইসমিলসমূহ হতে চালের বস্তার গায়ে-ধানের জাতের নাম, প্রস্তুতকারক মিলের নাম ঠিকানা, নিট ওজন, উৎপাদনের তারিখ এবং মিল গেটে চালের মূল্যের তথ্য লিখে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

Share this post

PinIt
scroll to top