চিতলমারী প্রতিনিধ।। বাগেরহাটের চিতলমারীতে গর্ভধারিণী মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, মমতা ও ভালবাসার স্বীকৃতি হিসেবে জন্মদাত্রী জীবন্ত মায়ের পূজা করেছেন অর্ধশত সন্তান। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১ টায় উপজেলার পরানপুর গ্রামের সমাজসেবক মন্মথ নাথ মন্ডল স্বর্গীয় পিতা যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল ও মাতা গৌরি রানী মণ্ডলের স্মৃতি স্মরণে ব্যতিক্রমী এই জীবন্ত মাতৃ পূজার আয়োজন করেণ।
ব্যতিক্রমী এ পূজায় মায়েরা নতুন বস্ত্র পরিধান করে তাদের আসনে বসেন। এ সময় বিভিন্ন বয়সের অর্ধশত সন্তান পরম যত্ন-শ্রদ্ধায় তাদের নিজ হাতে যার যার গর্ভধারিণী মায়ের পা ধুয়ে মুছে দেন। এরপর ধুপ-দীপ জ্বালিয়ে ফুল ও প্রসাদ সাজিয়ে মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে মায়েদের পূজা করেন। পূজা শেষে নিজের হাতে মায়েদের মুখে প্রসাদ তুলে দেন সন্তানেরা। মায়েরাও তাদের সন্তানদের মাথায় হাত দিয়ে প্রাণভরে আশীর্বাদ করে সন্তাদের মুখে প্রসাদ তুলে দেন। এ সময় মা-সন্তানদের কান্নায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে এ সময় অধ্যাপক সুব্রত মণ্ডল, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বর্ষণ মণ্ডলসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় ডিপ্লোমা চিকিৎসক গৌরঙ্গ হাজরা বলেন, ‘ব্যতিক্রমী এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে মায়েদের প্রতি সন্তানদের শ্রদ্ধা-ভক্তি ও ভালবাসা প্রদর্শনের এক অনুস্মরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে। মাটির তৈরি বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজার পাশাপাশি জীবন্ত মায়ের পূজা করার মত উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে।’
জীবন্ত মাতৃপূজার অন্যতম উদ্যোক্তা ও পৃষ্ঠপোষক সমাজ সেবক মন্মথ নাথ মণ্ডল জানান, ‘বর্তমানের তথা-কথিত আধুনিকতার ছোয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মা-বাবার প্রতি সন্তানদের শ্রদ্ধা-ভক্তি ও ভালবাসার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। শৈশব থেকেই যদি সন্তানদের নীতি শিক্ষার মাধ্যমে মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তির শিক্ষা দেয়া যায় তবে ভবিষ্যতে আর কোন পিতা-মাতাকে বৃদ্ধ বয়সে অবহেলার পাত্র হতে হবে না। এই চিন্তাবোধ থেকে তিনি সাত-আট বছর পূর্ব থেকে প্রতি বছর এই জীবন্ত মাতৃ পূজার আয়োজন করে আসছেন।