ওসমান গনি রিকন শার্শা প্রতিনিধি।। বেনাপোল-শার্শা-যশোর মহাসড়কে ট্রলি, আলমসাধু, নসিমন, করিমন, ভটভটিসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ যানবাহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এতে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এ অঞ্চলের মানুষ। সীমান্তবর্তী শার্শা উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বেনাপোলে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর।
বন্দরটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াত করেন। এ ছাড়া দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর হওয়ায় এই পোর্ট দিয়ে প্রতিদিন পণ্যবাহী প্রায় শতাধিক ট্রাক দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকে। বিভিন্ন দিক বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর থেকে সারা দেশে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বেনাপোল-শার্শা-যশোর সড়ক। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিন চাকাসহ বিভিন্ন অবৈধযান। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পরিবহন শ্রমিক-মালিকসহ স্থানীয়রা বলছেন, সড়কে অবৈধযান বন্ধে তারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তার পরও কোনো ফল মিলছে না। কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই চলছে এসব যানবাহন। এতে করে মহাসড়কে এক মহাআতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে পুলিশ বলছে, ইজিবাইকসহ আমদানি বন্ধ না করলে এসব অবৈধযান নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এগুলো আমদানি বন্ধ করতে হবে। শার্শা উপজেলার যশোর-বেনাপোল-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক দ্রুতগামী বাস, ট্রাক, মিনিবাস, কাভার্ডভ্যান চলাচল করছে। এগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছিল বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার, মালবাহী আলমসাধু ও ভটভটি। পথচারী মাহবুব আলম বলেন, রাস্তায় বের হলে দেখা যায় অবৈধ যানগুলোতে শিশু-কিশোররা চালকের আসনে বসে আছে। তাদের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এ ছাড়া অদক্ষ চালক দিয়ে এসব যানবাহন পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রশিক্ষণ ছাড়া এসব চালক দিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বাসচলক লিটন হোসেন বলেন, মহাসড়কের প্রায় সবগুলো দুর্ঘটনার প্রধান কারণ এসব অবৈধযান। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়ে সড়কে যানবাহন চালাচ্ছি। কিন্তু অবৈধ যানবাহনের চালকের কোনো প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স নেই। তাদের জরিমানাও করা হয় না। অথচ পুলিশকে ম্যানেজ করে ওই যানবাহনগুলো মহাসড়কে চলাচল করছে।
বেনাপোলের বাস মালিক হাফিজুর রহমান জানান, অবৈধ যানবাহনের কারণে বাস চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। সড়কে থ্রি-হুইলারের বেপরোয়া গতির কারণে বাসের সঙ্গে প্রায়ই মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে আবার বাস মালিকদেরই জরিমানা গুনতে হয়। সড়ক থেকে এসব তিন চাকার অবৈধযান সরানোর জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাই। যশোর জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মুসলিম উদ্দিন পাপ্পু জানান, আমরা বিগত দিনেও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একাধিকবার বসেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধ যানবাহন মহাসড়কে উঠবে না। অথচ হাইকোর্টের সেই নির্দেশনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে অবৈধ যানবাহন। প্রশাসন এগুলো বন্ধের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এব্যাপারে নাভারণ হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রাস্তা থাকলে যানবাহন চলবেই। যত দিন সরকার ইজিবাইকসহ এসব যানবাহন আমদানি বন্ধ না করবে তত দিন এগুলো চলবেই। তবে আমাদের পক্ষ থেকে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া অব্যাহত রয়েছে