নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়ূর নদ বাঁচাতে ক্ষেত্রখালী ও হাতিয়া নদীসহ সংযুক্ত খালসমূহ খননের দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় ময়ূর নদের পাড়ে সংগঠনটির খুলনা শাখার উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও খুলনা শাখার সমন্বয়ক এড. মোঃ বাবুল হাওলাদার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ময়ূর নদের বয়রা শ্মশানঘাট থেকে সাচিবুনিয়া ব্রিজ এবং ক্ষেত্রখালী/খুদিয়া নদীর আড়ংঘাটা কালভার্ট থেকে বয়রা শ্মশানঘাট পর্যন্ত মোট সাড়ে ৫ কিলোমিটার নদী খনন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যার কাজ চলমান। কিন্তু এ নদটি বিল ডাকাতিয়া থেকে উৎপত্তি হয়ে ক্ষেত্রখালী/খুদিয়া নাম ধারণ করে, বয়রা শ্মশানঘাট এলাকায় এসে নাম পরিবর্তিত হয়ে, ময়ূর নদ নাম ধারণ করে বুড়ো মৌলভীর দরগাহ্; সংলগ্ন ত্রিমোহনীতে এসে পুনরায় নাম পরিবর্তিত হয়ে, হাতিয়া নাম ধারণ করে আলুতলা এলাকায় রূপসা নদীতে পড়েছে। সিটি কর্পোরেশন মূলতঃ মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে। কিন্তু ময়ূর নদটি বাঁচাতে খুলনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি উপেক্ষিত রয়ে গেছে। একটি নদীর আংশিক খনন করে তার প্রবাহ নিশ্চিত করা বা বাঁচানো সম্পূর্ণ বাস্তবতা পরিপন্থি বলে বাপা মনে করে।
তিনি আরও বলেন, আংশিক খননের ফলে জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়টিও যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যায়। সমগ্র নদটি একটি সমন্বিত পরিকল্পনার আওতায় এনে আলুতলাস্থ ১০ গেট থেকে বিল ডাকাতিয়া পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদটি এবং এর সংযুক্ত খালসমূহ খনন করে উজান এবং ভাটিতে সমান প্রবাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। অন্যথায় এ প্রকল্পের কাজ শুধুমাত্র অর্থ অপচয় হবে। অন্যদিকে গলামারী ব্রিজ নির্মাণে নদী শাসনের নামে নদের প্রবাহ যেন বাধাগ্রস্ত বা সঙ্কুচিত না হয় সেটিও বিবেচনায় রাখা জরুরি। এ সময়ে আরও উলেখ করা হয়, ময়ূর নদ খনন প্রকল্পের চলমান খনন কাজ পানি শুকিয়ে ভেকু ও শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে পানি না সেচে পানির মধ্যেই খনন কাজ চলায় এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য কতটা বাস্তবায়িত হবে সে বিষয় আমরা যথেষ্ট সন্দিহান। মহানগরীসহ এ অঞ্চলের পরিবেশ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা, জলাবদ্ধতা নিরসন, কৃষিতে সেচ, মৎস্য চাষ, নদী নির্ভর মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন পুনরুদ্ধারে ময়ূর নদের দু’পাড়ের অবৈধ দখল উচ্ছেদ, দূষণ বন্ধ এবং সমগ্র নদটিকে খনন করে একটি সমন্বিত স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় এনে সমগ্র নদটি জোয়ার-ভাটার আওতায় আনা সময়ের দাবি।
সংগঠনের সদস্য এস এম দেলোয়ার হোসেনের পরিচালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য মুনীর চৌধুরী সোহেল, বীরমুক্তিযোদ্ধা নিতাই পাল, শিরিনা পারভীন, রুস্তম আলী হাওলাদার, অধ্যাপক সঞ্জয় সাহা, মামুনুর রহমান তুহিন, আফজাল হোসেন রাজু, এফ এম মনিরুজ্জামান, এড. মেহেদী ইনছার, খ ম শাহীন হোসেন, এড. মেহেদী হাসান, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, মুফতি ক্বারী মাহদী হাসান কাউসারি, মোঃ আউয়ুব আলী, অরুণ দাস ও ফারজানা কথা প্রমুখ।