আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর হুংকার
দেশের তথ্য ডেস্ক: যারা আগুন সন্ত্রাস করেছে, মানুষ মেরেছে, তাদের ছাড় নেই। আমরা প্রমাণ খুঁজে বের করছি। জ্বালাও পোড়াও যারা করেছে ও হুকুম দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে আ’লীগের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি গণতন্ত্র ফেরানোর নামে আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে উলেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, তাদের কোনো ছাড় নেই। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, নেবো। খুঁজে খুঁজে বের করা হচ্ছে। যারা হুকুমদাতা, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যাতে এ ধরনের জঘন্য কাজ আর কেউ করতে না পারে। এ সময় সব ষড়যন্ত্রকে পেছনে ফেলে দেশকে এগিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া দেশের উন্নয়ন হয় না, এটা প্রমাণিত। উন্নয়ন টেকসই করতে হবে। ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। আগামীতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাসভবনে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫’ পরবর্তী নির্বাচন যেন না হয় সে চক্রান্ত হয়েছিল। যতবার নির্বাচন বানচালের করতে চেয়েছে বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি। আসলে মানুষ কিন্তু আবার তার ভোটটা চুরি করলে ঠিকই ধরে ফেলে। ‘৯৬’ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারি খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করেছিল। তখন সারাদেশে প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনী সবাইকে নামিয়ে নির্বাচন করেছিল। কিন্তু সে নির্বাচনে ভোটার যায়নি। তারপরও সিল মেরে বাক্স ভরে ভোট নিলেও ২২ শতাংশের বেশি ভোট হয়নি। জনগণ তা মেনে নেয়নি, যে কারণে আন্দোলন হয় এবং খালেদা জিয়া পদত্যাগ করে।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে গণতন্ত্র ও দেশের মানুষের জয় হয়েছে। আ’লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে তখনই উন্নতি হয়েছে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে আ’লীগ। করোনাভাইরাসের অতিমারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জিনিসের দাম বেড়েছে। আবার নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে। যে কারণে হয়ত সামনে আরো দুর্দিন আসতে পারে। সব ষড়যন্ত্র অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে।
বিএনপিকে নিয়ে আ’লীগ সভাপতি বলেন, যারা গণতন্ত্রের ‘গ’ও বুঝে না। এমনকি বানানও করতে পারে না, তারা এখন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করে। তাদের আন্দোলন মানুষ পুড়িয়ে মারা, তারা জানে জ্বালাও- পোড়াও। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারা। নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলন করতে গিয়ে তারা বাসে, লঞ্চে ও রেলে আগুন দিয়েছে।
সংসদ নির্বাচনের আগে রাজধানীতে ট্রেনে আগুন লাগার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মা-ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ট্রেনে যেভাবে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। এই দৃশ্য কোনো মানুষ সহ্য করতে পারে না। যে কারণে তারা যতই চিৎকার করুক, চেঁচামেচি করুক, তাদের কথায় কিন্তু জনগণ সাড়া দেয়নি এবং যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করেছে তাদের কোনো ছাড় নাই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নেব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রিটার্ন কী আসবে, তা মাথায় রাখতে হবে। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য যা কল্যাণকর আমরা সেটা করে যাবো। আর এজন্য সকলের মধ্যে দৃঢ় ভাবটা থাকতে হবে। নিজের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। আত্মমর্যাদাবোধ থাকতে হবে। অনেক দেশই ভাবতে পারেনি ১৫ বছরে বাংলাদেশ এতো এগিয়ে যাবে। এখানেও অনেকেরই পরশ্রীকাতরতা আছে, তারা এসব শুনে যারা দায়িত্বে আছেন তারা কাজের ক্ষেত্রে পিছুপা হবে না।
হয়ত সামনে আরও দুর্দিন আসতে পারে : ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ নানা কারণে সামনে হয়ত আরও দুর্দিন আসতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন অবস্থায় দেশে যেন খাদ্য সংকট না হয় সেজন্য উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি। খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম বেড়েছে, বাংলাদেশেও জিনিসের দাম বেড়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের খাবারের যেন কোনো অভাব না হয়, সেটা আমাদের করতে হবে, নিজেদের করতে হবে।