দেশের তথ্য ডেস্ক:-
নির্বাচন নিয়ে দেশ সংকটে। গণতন্ত্র বাঁচাতে হলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের দিন গুরুত্বপূর্ণ, হয় সফল না হয় ব্যর্থ হবো। অবিতর্কিত ফলাফল চায় কমিশন। তবে আমরা অবশ্যই সফল হবো। আমরা দেখতে চাই গ্রহণযোগ্য ভোট।
সোমবার সকালে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সদস্যের নির্বাচনী আইন বিধি ও কর্মপদ্ধতি বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে নির্বাচনকে টিকিয়ে রাখতে হবে। সাধারণ জনগণ যদি বলে এবারের নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার এবং ক্রেডিবল হয়েছে, তবেই এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষীপুর দু’টি আসনের উপ-নির্বাচনে দেখা গেছে যে, প্রকাশ্যে সিল মারা হচ্ছে। ওই নিবার্চনের জন্য আমরা লজ্জিত। আমরা এ রকম নির্বাচন আর চাই না।
সিইসি বলেন, ‘আমি আগে বিচার বিভাগে কাজ করেছি। বিচার বিভাগের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো স্বাধীনতা। দেশের মানুষ বিচার বিভাগকেই স্বাধীন বলে বিবেচনা করে। দেশের মানুষের আস্থাটা বিচার বিভাগের ওপর সবচেয়ে বেশি। তাই আপনারা যেখানে কাজ করবেন সেখানে স্বাধীন ও স্বচ্ছতার ভেতরে কাজ করবেন।’
সিইসি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হবে। পোলিংয়ে ১০ গুণ বেশি নজর রাখবেন। পোলিং হচ্ছে কাস্ট অব ভোট। বাক্সগুলো ওপেন করা হবে, সবাই প্রতিটি কেন্দ্রে চোখ রাখবেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন নিয়ে কিন্তু দেশ একটা সংকটে আছে। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে আছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এখানে সকলকে সমভাবে দায়িত্বশীল হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে আমাদের কমান্ড করতে পারে, আমরা তাদের পাল্টা সেভাবে কমান্ড করতে পারি না, মন্তব্য করে সিইসি বলেন, আমাকে বাঁচাতে হলে, আমার জনগণকে বাঁচাতে হলে, আমার গার্মেন্টসকে বাঁচাতে হলে, আমার সাধারণ জনগণকে বাঁচাতে হলে, যে দাবিটা আমাদের জনগণের এবং পাশাপাশি বাইরের (বিদেশিদের)…ওরা খুব বেশি দাবি করেনি, ওদের একটাই দাবি যে, বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার হতে হবে। কোনোরকম কারচুপির আশ্রয় নেওয়া যাবে না।
নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নির্বাচনে কিন্তু বাহির থেকেও থাবা, হাত এসে পড়েছে। তারা থাবা বিস্তার করে রেখেছে। আমাদের অর্থনীতি, আমাদের ভবিষ্যৎ, আমাদের অনেক কিছুই রক্ষা করতে হলে এই নির্বাচনটাকে ফ্রি, ফেয়ার-ট্রেডিবেলি করতে হবে।
সিইসি বলেন, বাইরের দেশের সবার শুধু একটাই দাবি, বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনটা যেন ফ্রি, ফেয়ার এ্যান্ড ট্রেডিবেল হয়। এখানে কোনোরকম কারচুপির আশ্রয় নেয়া যাবে না।
নির্বাচন কমিশনকে প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও পুলিশের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে উলেখ করে সিইসি বলেন, তাদের সহায়তা ছাড়া নির্বাচন কমিশন এককভাবে নির্বাচন করে না, করতে পারে না। সকলের আন্তরিক ও সৎ সাহসিক সহায়তা আমাদের লাগবে। এজন্য আমরা আশা করবো, সবাই চোখ, কান খোলা রেখে সৎভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসি সচিব মোঃ জাহাংগীর আলম বলেন, ‘নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনের জন্য যে কয়টা আইন আছে তার মধ্যে আরপিও গুরুত্বপূর্ণ। ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির আগের নির্বাচনের জন্য একটি বা দু’টি কমিটি গঠন করা হত। এবারই প্রথম বড় পরিসরে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আপনাদের সার্বিক দায়িত্ব পালনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন আপনাদের যে দায়িত্বে নিয়োজিত করেছে, সে দায়িত্ব যথাযথভাবে প্রতিপালনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবেন এই প্রত্যাশা রাখছি।
অনুষ্ঠানে ইসি অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথসহ নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।