দেশের তথ্য ডেস্ক:-
সড়ক উন্নয়ন কাজের ড্রেন নির্মাণে অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি, ড্রেনের পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে নির্মাণ কাজ করার কারণে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র প্রধান ফটকের সামনে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সড়কের সামনে দিয়ে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো এবং একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী ড. মো. জুলফিকার হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, এপ্রোচ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। সিডিউল অনুযায়ী টাইম মেইনটেইন করে তারা কাজ করছে না। বর্ষা মৌসুমে ড্রেনের কাজ করছে, ড্রেনের পানি যাবে কোথায় ? বিকল্প উপায়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে তারা তাদের মতো করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পানি জমে আছে।
এ ছাড়া সড়কটি দিয়ে যাতায়াতকারী জনগণের দুর্ভোগ হচ্ছে। তারা যেভাবে খোঁড়াখুঁড়ি করছে এতে করে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিটি কর্পোরেশনেরও তদারকির অভাব রয়েছে, তাদের অবহেলা রয়েছে। তিনি বলেন, এভাবে কাজ চলতে থাকলে আগামী দুই বছরের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ হবে না।
জানা যায়, প্রকল্পের নির্মাণ কাজে চলতে ধীরগতিতে। সাড়ে ৬ মাসে ড্রেন নির্মাণের কাজ হয়েছে মাত্র সাড়ে ৭’শ মিটার। কার্যাদেশের সাড়ে ৮ মাস পরও মূল সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এপ্রোচ সড়ক উন্নয়ন কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার সেই নির্দেশ বাস্তবায়নে সংশয় দেখা দিয়েছে। এর আগে ১২ জানুয়ারি প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা কেসিসি মাহবুব ব্রাদার্স প্রাঃ লিঃ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেক কুয়েট এপ্রোচ সড়ক উন্নয়ন কাজের কার্যাদেশ প্রদান করে। কুয়েট সড়কের প্রবেশদ্বার খুলনা যশোর মহাসড়কের ফুলবাড়িগেট হতে গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুল পর্যন্ত ১১৮৫ মিটার সড়ক আধুনিকায়ন হবে। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এলজিইডি ও কেসিসি’র যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সড়কটি আধুনিকায়নের কাজ চলছে। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা খুলনা সিটি কর্পোরেশন চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মাহবুব ব্রাদার্স প্রাঃ লিঃ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করে।
কার্যাদেশ অনুযায়ী খুলনা-যশোর মহাসড়কের ফুলবাড়িগেট হতে গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুল পর্যন্ত ১১৮৫ মিটার সড়ক আধুনিকায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ কোটি ৮৪ লাখ ৫৪ হাজার ২৩০ টাকা। গভারমেন্ট অফ বাংলাদেশ (জিওবি) এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) কাজটিতে অর্থায়ন করছে।
প্রকল্পের আওতায় খুলনা-যশোর মহাসড়কের কুয়েট রোডের প্রবেশদ্বারে আধুনিক ট্রাফিক আইল্যান্ড ও গাড়ি পার্কিং এর সুব্যবস্থা থাকবে। কুয়েট রোডের প্রবেশদ্বার হবে ৬০ ফুট প্রশস্ত। ২ লেন বিশিষ্ট সড়কটির প্রত্যেক লেন প্রশস্ত হবে সাড়ে ২২ ফুট। ১ ফুট উঁচু হবে সড়কটি। সেই হিসেবে মূল এপ্রোচ সড়কটি প্রশস্ত হবে ৪৫ ফুট। সড়কের মাঝখানে রোড ডিভাইডারসহ দুই পাশে পানি নিষ্কাশনে থাকবে ৫ ফুট প্রশস্ত ড্রেন। ড্রেনের উপর দিয়ে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ফুটপাতের ব্যবস্থা থাকবে। কুয়েট প্রধান ফটকের সামনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় নির্মিত হবে দৃষ্টিনন্দন আইল্যান্ড।