মিলন হোসেন বেনাপোল,
যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি রেললাইনের পাশে তিন যুগ ধরে বসবাস করা স্বামী-সন্তানহারা আমেনা বেগমের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন শার্শা উপজেলা সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) ফারজানা ইসলাম।এসি ল্যান্ডের হস্তক্ষেপে আমেনা বেগমের বসবাসের ঘরটি মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এসি ল্যান্ড ফারজানা ইসলাম জানান, সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) শার্শা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ আমেনা বেগমকে শুনানির জন্য ভূমি অফিসে ডাকা হয়। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর তাকে দেওয়ার জন্য তাকে ডাকা হলেও তিনি ঘরটি নিতে চাননি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর উপজেলার কানাইনগর গ্রামে হওয়ায় আমেনা বেগম দূরে ওই গ্রামে যেতে চাচ্ছেন না। তিনি অসুস্থ হওয়ায় কোন কাজ করতে পারেন না। শ্যামলাগাছির উদ্ভাবক মিজানের‘ফ্রি খাবার বাড়ি’ থেকে তিনি তিন বেলা খাবার খান এবং বয়স্ক ভাতা পান। তিনি দূরের গ্রামে গেলে তার খাওয়ার কষ্ট হয়ে যাবে এবং বয়স্ক ভাতা তোলাও কষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য তিনি যেখানে আছেন সেখানেই তার ঘর মেরামত করার আবেদন জানান।
এসি ল্যান্ড আরও জানান, আমেনা বেগমের আবেদনের প্রেক্ষিতে সব কিছু বিবেচনা করে রেললাইনের পাশে তিনি যে ঘরে থাকেন সেটি মেরামত করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা দ্রুত তার ঘরটি মেরামত করে দেবেন। আমেনা বেগমও এটিতে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
আমেনা বেগম বলেন, আমার ভাঙাচোরা ঘরটি মেরামত করে দেওয়া হবে জেনে আমি খুব আনন্দিত। কৃতজ্ঞতা জানাই উপজেলা সহকারী কমিশনারকে। আমি কাজ করতে পারি না, আমার খাওয়ার কষ্ট হবে বলে আমি দূরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিতে রাজি হইনি।
আমেনা বেগমের প্রতিবেশী উদ্ভাবক মিজানুর রহমান বলেন, এসি ল্যান্ডের উদ্যোগে আমরা আনন্দিত। তার প্রতি আমরা সকলে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমেনা বেগম আমার এখানে তিন বেলা খেয়ে থাকেন। তার ওষুধ কেনার জন্য আমি যতটুকু পারি সাহায্য করি।
আমেনা বেগম যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছী রেললাইনের পাশে জোড়াতালি দেওয়া একটি টিনের ঝুপড়ি ঘর বেঁধে বসবাস করেন। এভাবেই এখানে কাটিয়ে দিয়েছেন তিন যুগেরও বেশি সময়। আমেনা বেগমের স্বামী বজলে বিশ্বাস ২০ বছর আগে মারা যান। এরপর অভাবের সংসারের ভার কমাতে দুই মেয়ে পারভীন ও তভেনাকে বিয়ে দিয়ে দেন। স্বামী হারিয়ে, সন্তান ছাড়া রেললাইনের পাশে একাকি সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তিনি।