ঢাকা দেখবে ছাত্রলীগের উচ্ছ্বাস

chatrolig.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক:- 

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধান অতিথি থাকবেন শেখ হাসিনা

আজ ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তারুণ্যের সমাবেশ। বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশে হবে। ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম এই সংগঠনটি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে আজ বেলা ৩টায় এ ছাত্রসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সভাপতিত্ব করবেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

এছাড়াও আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী এ সমাবেশে অংশ নেবেন। ছাত্রলীগের টার্গেট হচ্ছে- আজকের এ সমাবেশে অন্তত পাঁচ লাখ লোক উপস্থিত করানো। এছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থী এ সমাবেশে অংশ নেবেন এমনটা প্রত্যাশা সংগঠনটির। ছাত্রলীগ মনে করে, আজকে শেখ হাসিনাকে নিয়ে দেশের সব পর্যায়ের লাখ লাখ শিক্ষার্থীর উচ্ছ্বাস দেখবে রাজধানী ঢাকা।

প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান : ঢাকায় কয়েক লাখ শিক্ষার্থী সমাগমের লক্ষ্য নিয়ে বিশাল সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি শেষ করেছে ছাত্রলীগ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। সামনে অতিথিদের জন্য সারি করে বসানো হয়েছে চেয়ার। এরপর বিস্তীর্ণ খোলা ময়দানে বাঁশের বেড়া দিয়ে স্থান ভাগ করে দেয়া হয়েছে সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের জন্য।

ছাত্রলীগের নেতারা জানান, মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান থাকবেন। মঞ্চের সামনে দেড় হাজার চেয়ার থাকবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য। ব্যাপক শিক্ষার্থী সমাগম ঘটাতে মাইকিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার ও লিফলেট বিতরণ ছাড়াও ছাত্রলীগের ইউনিটগুলোকে ইতোমধ্যে নানা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সমাবেশ উপলক্ষে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাদে ২৯৮ সদস্যবিশিষ্ট ১৮টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে ১২৭টি সমন্বয় টিম গঠন করা হয়েছে। সমাবেশের আগের দিন অর্থাৎ গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মঞ্চস্থল পরিদর্শন করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

সমাবেশ থেকে যে বার্তা দিতে চায় ছাত্রলীগ : রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজকের সমাবেশ ঘিরে গতকাল জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্রলীগ। সংগঠনটি বলছে, এ সমাবেশের মধ্য দিয়ে ছাত্রসমাজ উচ্চারণ করবে, ‘ওয়ানস অ্যাগেইন শেখ হাসিনা।’ ২৪ এর জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার পক্ষে যে নিরঙ্কুশ ব্যালট বিপ্লব হতে যাচ্ছে, তার একটি রাজনৈতিক প্রতীকী প্রতিফলন হিসেবে আমরা ১ সেপ্টেম্বর বেছে নিয়েছি। ঢাকায় ছাত্রলীগের আজকের এ সমাবেশ থেকে বিশেষ বার্তা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্টের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। আমরা স্মরণকালের বৃহত্তম ছাত্র সমাবেশ করতে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘এটি শুধুমাত্র সংখ্যায় বৃহত্তম হবে না আমরা মনে করি, আমাদের যে ছাত্র সমাবেশ হবে, এটির যে রাজনৈতিক প্রভাব থাকবে; আমরা মনে করি, এটি রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অবিশ্বাস্য পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই ছাত্র সমাবেশের মধ্য দিয়ে আমরা গোটা বাংলাদেশকে এই বার্তাটি দিতে চাই, আমরা যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান থাকব, জাতির পিতার আদর্শে বলীয়ান থাকব এবং একইসঙ্গে খুনি-সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের সঙ্গে আপস করার কোনো জায়গা বাংলাদেশের ছাত্র সমাজে আর নেই। নো কমপ্রোমাইজ উইথ দ্য কিলার্স ছাত্র সমাবেশ থেকে আমরা এই বার্তা নিয়ে আসব’— বলেন সাদ্দাম।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এ দেশের পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর যে গভীর ভালোবাসা-ভাবাবেগ রয়েছে সেটির বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য এই ছাত্র সমাবেশকে বেছে নিয়েছি। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এটি আর শুধুমাত্র ছাত্রলীগের সমাবেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি বাংলাদেশের পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর প্রতীকী সমাবেশে পরিণত হতে যাচ্ছে।’ এই ছাত্র সমাবেশের মাধ্যমে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে আমাদের যে আগমনী রায় সেটি আমরা প্রকাশ করতে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশ আজ দলীয় কোনো বিষয় নয়। স্মার্ট বাংলাদেশ তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন, লক্ষ্য ও ঠিকানায় পরিণত হয়েছে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘দেশবিরোধী যেকোনো অপশক্তির অপতৎপরতাকে রুখে দিতে আমরা লাখো তরুণকে নিয়ে শপথ নিতে চাই। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর, ঐতিহাসিক ছাত্রসমাবেশ থেকে বার্তাটি আমরা সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই।’

নেতাকর্মীদের জন্য ১০ নির্দেশনা : সমাবেশে শৃঙ্খলা বজায়সহ বিভিন্ন দিকনির্দেশনা তুলে ধরেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

এক. সর্বাবস্থায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। শৃঙ্খলার ব্যত্যয় ঘটে এমন যে কোনো কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হচ্ছে।

দুই. যে কোনো বিশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি-ইউনিটের প্রতি তাৎক্ষণিক, চূড়ান্ত ও স্থায়ী সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিন. সমাবেশে প্রবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

চার. সমাবেশস্থলে কোনোভাবেই ব্যানার নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না।

পাঁচ. স্বেচ্ছাসেবকদের সরবরাহকৃত উপকরণ ব্যতীত পতাকা, ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে প্রবেশ করা যাবে না। ছয়. নির্ধারিত সময়ে গেট খুললে দ্রুততম সময়ে শৃঙ্খলার সঙ্গে প্রবেশ করতে হবে।

সাত. সমাবেশস্থলে একাধিকবার প্রবেশ ও বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

আট. শারীরিক যে কোনো সমস্যার ক্ষেত্রে মেডিকেল ক্যাম্পে যোগাযোগ করতে হবে।

নয়. সমাবেশ স্থল ও এর আশপাশে এলাকার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতে সতর্ক থাকতে হবে।

দশ. জনদুর্ভোগ পরিহার করতে হবে এবং অযথা যানজট সৃষ্টি না করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে।

Share this post

PinIt
scroll to top