দেশের তথ্য ডেস্ক:-
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন
কোনো এলাকা থেকে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানে গিয়ে তদন্ত করতে হবে
—অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান
নির্বাহী পরিচালক, আইপিডি
ডাটাবেজের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মাণাধীন ভবনগুলোর তালিকা করে ডিএনসিসির বার্তাটি পৌঁছে দেবে
—মকবুল হোসাইন
জনসংযোগ কর্মকর্তা, ডিএনসিসি
প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। ডাটাবেজের মাধ্যমে ডেঙ্গু সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। এর অংশ হিসেবে মশকনিধন কার্যক্রমকে আরও কার্যকরী করতে বড় বড় ভবন ও নির্মাণাধীন ভবনের ডাটাবেজ তৈরি করছে ডিএসসিসি। ডাটাবেজের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মশার লার্ভা আছে কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যাবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ডাটাবেজ তৈরি করলেই এডিসের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব নয়; সেই অনুযায়ী কার্যক্রমও করতে হবে। আর ডাটাবেজের সব তথ্য হতে হবে স্বচ্ছ। সঠিকভাবে তদারকি না করলে তেমন কোনো সুফল বয়ে আনবে না। ডাটাবেজটা এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে কে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে বা হাসপাতালে ভর্তি— তা বের করা যায়।
ডিএনসিসি সূত্রের দাবি, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি থেকে তিন স্তরে কাজ করছে। কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স গঠন করে বড় বড় ভবন ও নির্মাণাধীন ভবনের ডাটাবেজ তৈরি করছে। নির্মাণাধীন ভবনের মালিককে চিঠি দিতে কাউন্সিলরদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শুধু নির্মাণাধীন ভবন নয়, উত্তর সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডের ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। এর ফলে মশকনিধন ও অভিযান কার্যক্রমে বেগ পোহাতে হবে না। ইতোমধ্যে তাদের কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে বলেও জানা গেছে। ডিএনসিসি থেকে এসব কথা জানালেও সাধারণ জনগণ বলছে ভিন্ন কথা। তাদের দাবি এখনো সব ওয়ার্ডে ডাটাবেজের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি। তাদের কাজে উদাসিনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। তা ছাড়া যেসব এলাকায় ডাটাবেজ তৈরি হয়েছে, সেই স্থানে সঠিকভাবে নিয়ম অনুযায়ী কার্যক্রম হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। এসব কার্যক্রম অধিক সময় নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক হয়ে থাকে। ফলে ডাটাবেজেও তেমন ফলপ্রসূ হচ্ছে না।
ডাটাবেজের মাধ্যমে মশকনিধন কার্যক্রম কতটা সফল হতে পারবে জানতে চাইলে ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক, অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান আমার সংবাদকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে অনেক ডাটা ইতোমধ্যে সংরক্ষিত আছে। সেগুলোকে ভালো করে আপডেট করতে হবে। এ ছাড়া আরো বেশি মনিটরিং করতে হবে। মূল কথা হলো, ডাটাবেজ মশকনিধন কার্যক্রমে যতটা দরকারি, তেমনি কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে গঠিত টাস্কফোর্সের সক্রিয়তাও থাকা দরকার। নগর পরিকল্পনাও ঠিক করা দরকার। শুধু ডাটাবেজ করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে ব্যাপারটি এমন নয়। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে সব তথ্য থাকলে ডিএনসিসির কাজ করতে বা পরিকল্পনা নিতে সহজ হবে।
ড. আদিল মুহাম্মদ খান আরও বলেন, কোনো এলাকা বা ওয়ার্ড থেকে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে, সেখানে গিয়ে তদন্ত করতে হবে। কোনো লার্ভা আছে কি-না বা কেন ডেঙ্গু হলো তা খতিয়ে দেখতে হবে। তাদের সব ডেটা সংরক্ষণ থাকলে তবেই এটি সম্ভব। আমাদের সেই উদ্যোগটা না থাকায় সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে না। সমস্ত নগরে একসঙ্গে কাজ না করলে ডেঙ্গু মোকাবিলা সম্ভব হবে না। শুধু নির্দিষ্ট এলাকায় করলে তার কোনো ভালো ফলাফল আসবে না।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন আমার সংবাদকে বলেন, ‘ডাটাবেজের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মাণাধীন ভবনগুলোর তালিকা করে ডিএনসিসির বার্তাটি পৌঁছে দেবে। সতর্কবাণী হিসেবে তাদেরকে বলে দেবে— ভবনগুলো পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোনোক্রমেই লার্ভা জন্মাতে পারবে না। লার্ভা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো ভবনেই লার্ভা থাকা যাবে না। বিশেষ করে বেজম্যান্ট ও কার পার্কিং পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মানুষকে সতর্ক করার মাধ্যমে এডিসের লার্ভা ধ্বংস করার চেষ্টা করতে হবে। আমরা যে সব স্থানে সতর্ক করেছিলাম পরবর্তীতে সেখানে কোনো ধরনের লার্ভা বা অপরিচ্ছন্ন অবস্থা দেখা যায়নি। ফলে বুঝা যাচ্ছ ‘আমদের এগিয়ে যাচ্ছে’ বলছেন মকবুল হোসাইন।