দিনাজপুরের যমজ তিন ভাই-বোনের চমক এসএসসিতে

3-vai-bon.webp

দেশের তথ্য ডেস্ক দিনাজপুর প্রতিনিধি :-  এ বছর এএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় চমক দেখিয়েছেন তিন যমজ ভাইবোন। উপজেলার পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তারা সবাই জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন গোল্ডেন জিপিএ পেয়েছে।

জিপিএ-৫ প্রাপ্তরা হলেন- ভাই লাসার সৌরভ মুরমু এবং দুই বোন মেরি মৌমিতা মুরমু ও মারথা জেনিভিয়া মুরমু।

তিন ভাই-বোনের মধ্যে লাসার সৌরভ মুরমু ইঞ্জিনিয়ার এবং দুই বোন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন।
বিরামপুর উপজেলার পলিপ্রায়াগপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামে। বাবা জোহানেস মুর্মু ও মা সোহাগীনি হাসদার তিন যমজ সন্তান তারা। বাবা উত্তরবঙ্গ শিশু উন্নয়ন প্রকল্প নামের একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন এবং মা সোহাগীনি হাসদা গৃহিনী।

শুক্রবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যার কিছু আগে নিজ বাড়িতে কথা হয় যমজ তিন শিশুর মা সোহাগীনি হাসদার সঙ্গে। তিনি জানান, ২০০৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পার্বতীপুর একটি মিশন হাসপাতালে সকাল ১০টার দিকে লাসার সৌরভ মুরমু জন্ম নেয়। একইদিন, বেলা ১টার দিকে দুই বোন মারথা জেনিভা মুরমু ও মেরি মৌমিতা মুরমু জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই ওরা তিন ভাই-বোন পড়াশোনায় অনেক মনোযোগী।

২০১৭ বিরামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি সমাপনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পাইলট উচ্চবিদ্যায়ে ভর্তি হয়। করোনা ভাইরাসের কারণে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলেও এবার তারা এএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনজনই জিপিএ-৫ পেয়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার।
মা সোহাগীনি হাসদা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের সাফল্যে আমরা অনেক খুশি। মেয়ের স্বপ্ন রয়েছে বড় হয়ে ডাক্তার হওয়া আর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার।

আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাবো ছেলে-মেয়েদের স্বপ্ন পূরণের জন্য। এজন্য সকলের দোয়া প্রার্থনা করছি।
মেরি মৌমিতা মুরমু জানান, আমরা তিন ভাই-বোন একসাথেই পড়াশোনা করি। আমরা এমন ফলাফলে অনেক খুশি। আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক হচ্ছে আমাদের মা। বাবার উৎসাহে আমাদের অনুপ্রেরণা ছিল। আমরা একটি প্রাইভেট পড়তাম। মা একটি পুরনো ফোন ব্যবহার করতেন। আমারা কোনো ফোন ব্যবহার করতাম না। আমরা ক্লাসে পাশাপাশি রোল ছিল। শিক্ষকরা আমাদের অনেক উৎসাহ দিতেন।

প্রতিবেশী আব্বাস আলী জানান, আমাদের গ্রামের শিক্ষার্থীরা এমন সুন্দর ফলাফল করে আমাদের গ্রামের সম্মান উজ্জল করেছে। এটা আমাদের গর্বের বিষয়। আমরা গ্রামবাসী চাই তারা সামনে আরো ভালো ফলাফল করে তাদের স্বপ্ন পূরণ করুক।

জানতে চাইলে বিরামপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক আরমান হোসেন জানান, এবার এসএসসি পরীক্ষায় একই পরিবারের তিন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এতে আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক বেশ খুশি। আমি দোয়া করি আগামীতে তাদের স্বপ্ন পূরণ হোক। সৃষ্টিকর্তার কাছে এই কামনাই করি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুরাদ হোসেন বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই বিষয়টি জেনেছি। আমরা খুবই খুশি যে আমাদের উপজেলায় এরকম একটি ফলাফল করেছে একই পরিবারের তিন যমজ শিক্ষার্থী। উচ্চশিক্ষার জন্য উপজেলা প্রসাশনের কোনো সহায়তা লাগলে আমরা সেই বিষয়টি নজর দেব ইনশাআল্লাহ।

Share this post

PinIt
scroll to top