যমুনায় নিখোঁজ জামালপুরের তাওহীদের ফল এলো, পেয়েছে জিপিএ-৫

towhid-harano.webp

দেশের তথ্য ডেস্ক জামালপুর প্রতিনিধি :-  জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে যমুনা নদীতে নিখোঁজ শিক্ষার্থী তাওহীদ আদনান আপন এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। তাওহীদ জামালপুর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। সে গত ২৪ জুন দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানি ইউনিয়নে দাদা বাড়িতে বেড়াতে যায়। ওইদিনই বিকেলে বাহাদুরাবাদ নৌ-ঘাট দেখতে গিয়ে ফোনে ছবি তোলার সময় যমুনা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়।

গত এক মাসেও তার সন্ধান মেলেনি। তার আর্মি অফিসার হওয়ার স্বপ্ন ছিল বলে জানিয়েছেন তার শোকার্ত বাবা মহিউদ্দিন হীরু।
তাওহীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তাওহীদের বাবা মো. মহিউদ্দন হীরু ঢাকা-১৩ কর অঞ্চলের ষাঁট মুদ্রাক্ষরিক এবং তার মা নাজনিন আক্তার জামালপুর সদর উপজেলায় সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করছেন। গত ২৪ জুন বিকেলে তাওহীদ ঈদের ছুটিতে দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানি ইউনিয়নে তার দাদা বাড়িতে বেড়াতে যায়।

ওই দিনই তাওহীদ বন্ধুদের সাথে যমুনা নদীতে নবনির্মিত বাহাদুরাবাদ নৌ-ঘাট দেখতে যায়। ঘাটে দাঁড়ানো লঞ্চে ওঠে তাওহীদ বন্ধুদের সাথে ছবি তুলতে থাকে। একপর্যায়ে তাওহীদ যমুনা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল ও স্থানীয়রা টানা দু’দিন নদীতে নেমে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাওহীদের সন্ধান পাননি।

নিখোঁজের পর থেকে গত এক মাসেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাওহীদ জামালপুর জিলা স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। শুক্রবার (২৮ জুলাই) ঘোষিত ফলাফলে সে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছে। কিন্তু নিখোঁজ সন্তানের ভালো ফলাফলও তার বাবা-মাকে আরো বেশি শোকাহত করে তুলেছে। ছেলের এসএসসি ফলাফল জানার পর থেকে তার বাবা-মা কান্নায় মূর্ছা যাচ্ছেন।

তাওহীদের বাবা মো. মহিউদ্দিন হীরু কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দেওয়ানগঞ্জে আমার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে যমুনা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছে আমাদের আদরের ছেলে তাওহীদ। আমার ছেলে টিকটক করতে যায়নি। আমার ছেলেকে নিয়ে আমি ওমরা হজ করেছি। আমার ছেলে নামাজ পড়তো। সে আর্মি অফিসার হবে বলে আমাদের বলতো। আমি ওকে মোবাইল ফোন সেট কিনে দিইনি। ওর বন্ধুর ফোন সেট দিয়ে ছবি তোলার সময় নদীতে পড়ে যায়। ওকে আমি কথা দিয়েছিলাম এসএসসি পরীক্ষার ফল ভালো করলে ভালো ফোন সেট কিনে দিতে চেয়েছিলাম। ও খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। ও বলেছিল গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাবেই। শুধু বাংলা বিষয় ছাড়া সব বিষয়েই জিপিএ-৫। কিন্তু আমি আর আমার বাবাকে (ছেলেকে) ফিরে পাবো না। এগুলো এখন কেবলি স্মৃতি। মহান আল্লাহ ওকে জান্নাতবাসী করুক।

Share this post

PinIt
scroll to top