ভারত-বাংলাদেশ যৌথ আলোচনায় বেনাপোলে পরীক্ষামূলোক রুপিতে আমদানি পণ্যের প্রথম চালান

rupee.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক বেনাপোল প্রতিনিধি :-  ডলার সংকটের কারনে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ আলোচনায় পরীক্ষামূলোক রুপিতে আমদানি পণ্যের প্রথম চালান বেনাপোল বন্দরে পৌঁছেছে। রুপিতে পন্য আমদানির উদ্বোধনের ১৪ দিন পর পেট্রাপোল বন্দর হয়ে বেনাপোল বন্দরে ঢুকল প্রথম চালানের ৩৬ টি চ্যাসিস।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ভারতে পেট্রাপোল বন্দর হয়ে ১ কোটি ২৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৬০ রুপি মূল্যের ৪টি ট্রাকে ৩৬ টি চ্যাসিস নিয়ে বন্দরে প্রবেশ করে। পণ্যের দেশীয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নিতা কোম্পানী লিমিটেড এবং রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের টাটা মটরস লিমিটেড।আমদানিকারক নিতা কোম্পানী লিমিটেডের যশোর এরিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ডলারের বিপরীতে রুপিতে প্রথম পণ্য চালান বন্দরে প্রবেশের তথ্য নিশ্চত করেছেন।

গত ১১ জুলাই ঢাকায় দুই দেশের প্রতিনিধিরা একটি বৈঠক করে রুপিতে আমদানি বাণিজ্যের এলসি কার্যক্রম আনুষ্ঠানিভাবে উদ্বোধন করেন। রুপিতে বাণিজ্য দ্রুত সময়ে পণ্য আমদানিতে বড় ভূমিকা রাখবে এবং বৈশ্বিক মন্দায় ডলারের বিকল্প হিসাবে বড় ভূমিকা রাখবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহামুদ বিপুল জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বছরে ১৬ বিলিয়ন ডলারের মতো বাণিজ্য হয়। এর মধ্যে ভারত থেকে মাত্র ২ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আয় আসে। অর্থ্যাৎ দুই বিলিয়ন ডলারের লেনদেন হতে পারে রুপিতে। তবে ভারতে রফতানি বাড়াতে পারলে সে হিসাব পালটে যাবে। ডলারের নির্ভরতা আরও কমে আসবে।

বেনাপোল আমদানি ও রফতানি সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, রুপিতে আমদানি ব্যয় মেটানোর বিষয়ে গত এক দশক আগে আলোচনা শুরু হয়। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ডলার সংকট দেখা দিলে রুপিতে পণ্য আমদানির বিষয়টি নতুন করে প্রাধান্য পায়।

বাংলাদেশের ইস্টার্ন ও ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে রুপিতে লেনদেন করতে পারবেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। সোনালী ব্যাংক অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। ভারত অংশে এ সম্পর্কিত বিষয়ের দায়িত্বে থাকবে দেশটির আইসিআইসি ব্যাংক এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য সহজিকরণে ভারতীয় মুদ্রা রুপিতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী বাণিজ্যিক সংগঠনের নেতাদের মধ্যে নতুন করে আশার আলো সঞ্চার হয়েছে। রুপিতে লেনদেনের চাহিদা বাড়লে পর্যায়ক্রমে অন্য ব্যাংককেও অনুমতি দেবে বাংলাদেশ এবং ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মো. মেহেরুল্লাহ জানান, বর্তমান ডলার সংকটের এ বাজারে রুপিতে আমদানি ব্যয় পরিশোধ বাণিজ্যকে আরও সহজ ও সাশ্রয়ী করবে। সরকারের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, রফতানি আয় থেকে যে রুপি আসবে তা দিয়ে আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। এতে আবার ডলারের ওপর নির্ভর করতে হবে। তাই আগামীতে রুপির পাশাপাশি বাংলাদেশি মুদ্রায় যেন আমদানি ব্যয় মেটানো যায় তার দাবি জানাচ্ছি।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামছুর রহমান জানান, চলমান ডলার সংকটকালীন সময়ে বাণিজ্যসহজ করতে রুপিতে আমদানি ব্যায় মেটানো বড় সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এতে আমদানি, রফতানি ও রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

Share this post

PinIt
scroll to top