দেশের তথ্য ডেস্ক খুলনা প্রতিনিধি :- বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। নগরীতে পলাশ হাওলাদার (২০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে পলাশের মাতা শিউলি বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পলাশের স্ত্রী কুলসুম বেগম। গতকাল রবিবার দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, শিউলি বেগমের ছেলে পলাশ হাওলাদারকে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর শাহজাহানের ছেলে মোঃ নুর আজিম ও শানু মহুরি তার ছেলেকে প্রকাশ্যে দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের ঘটনা নগরীর সকলেই অবগত আছেন। তবে পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। আসামি নূর আজিম তার বাহিনী নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বলছেন নূর আজিম আত্ম গোপনে রয়েছে।
নিহতের মা বলেন হত্যাকান্ডের দিন ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকাল অনুমান ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে পলাশ হাওলাদার লবণচরা আশরাফুল সড়কের বাসা থেকে নতুন বাজারে মাছ ক্রয়ের জন্য বের হয়। নতুন বাজার থেকে বাসায় ফেরার সময় তার বন্ধু টুটপাড়া এলাকার মোজাম্মেল গাজীর ছেলে সৌরভ (২২) এর সাথে বাইতুল আমান মহলায় দেখা হয়। তারা দু’জনে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রানীর চায়ের দোকানের সামনে চা পান করছিলেন। ইতোমধ্যে মোটরসাইকেলযোগে সন্ত্রাসী নূর আজিম বাহিনী পূর্ব শত্র“তার জের ধরে পলাশ ও তার বন্ধু সৌরভকে ঘিরে ধরে এবং সন্ত্রাসী নূর আলিম তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে সৌরভকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথা লক্ষ্য করে কোপ দেয়। এ সময় পলাশের বন্ধু হাত দিয়ে ঠেকালে কোপ আমার ছেলের বন্ধুর বাম হাতের বাহুতে লেগে লুটিয়ে পড়লে আমার ছেলে জীবন বাঁচানোর তাগিদে দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে সন্ত্রাসী নুর আজিম বাহিনী তার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে টুটপাড়া তালতলা এলাকার বায়তুল মামুর এলাকার মুজিবর রহমানের বাড়ির ফাঁকা জায়গায় পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা ঘেরাও করে এলোপাতাড়ি কোপ দেয়। তার ডাক চিৎকারে নুর আজিম বাহিনী পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা পলাশ ও তার বন্ধুকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পলাশকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মাতা শিউলি বেগম বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় মামলা করেন।
মামলার বাদী শিউলি বেগম বলেন, কয়েকজন আসামি গ্রেফতার হলেও প্রধান আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। র্যাবের হাতে অনেকে গ্রেফতার হলেও জামিনে বের হয়ে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলার আসামিরা হলেন নুর শানু মহুরীর ছেলে নূর আজিম (৩২), মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে বিসমিলাহ (৩৫), নুলাই শেখের ছেলে নয়ন শেখ (২৩), সাঈদ মিয়ার ছেলে নেওয়াজ (২৬), শাহজাহানের ছেলে রকি (২৬) সহ আরো ২০ জনের নাম উলেখ করে অজ্ঞাত ২০ জন। মামলার এজাহার দাখিলের দীর্ঘ ৯ মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও আজও চার্জশিট দাখিল করতে পারেনি পুলিশ। নিহতের মাতা ও স্ত্রী পিবিআই’র কাছে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন।
সদর থানার এস আই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই উজ্জল সরকার বলেন, মামলার প্রধান আসামি আত্ম গোপনে রয়েছে। নয়জন আসামি আত্মসমর্পণ করেছেন এবং ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।