দেশের তথ্য ডেস্ক ঢাকা প্রতিনিধি :- মাঠে এবং পুরস্কার বিতরণীর মঞ্চে হারমানপ্রীত কৌর বুঝিয়ে দিলেন, আধুনিক ক্রিকেটে ভারতের অবস্থান কোথায়! বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ড ভারত যে বৈশ্বিক ক্রিকেটের অঘোষিত অধিকর্তা, সেটি গোপন কিছু নয়। সেটিকে গতকাল আরো খোলাসা করে দিলেন ভারতের নারী দলের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর, মাঠে এবং মাঠের বাইরে। যদিও দুটি ঘটনাই ক্রিকেটীয় শিষ্টাচারের পরিপন্থী। প্রথমে তিনি মাঠেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন আউট হওয়ার পর।
নাহিদা আক্তারের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার তানভির আহমেদ আঙুল তুলতেই ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দেখান হারমানপ্রীত। আম্পায়ারের দিকে আগুনে দৃষ্টিতে শুরু ও শেষের মাঝে ব্যাট দিয়ে স্টাম্প ভেঙে সাজঘরে ফেরার পথে গ্যালারির দর্শকদের উদ্দেশ্যে ‘থাম্পস আপ’ দেখিয়েছেন হারমানপ্রীত। ১২৭ ওয়ানডে খেলা অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের এই প্রতিক্রিয়া যে ইতিবাচক কিছু নয়, সেটি দর্শকদের বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখানোর অনেক ঘটনা আছে।
সেসবের সীমারেখাও আইন করে টেনে দিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেট সংস্থা আইসিসি। গতকাল হারমানপ্রীত যে প্রতিক্রিয়া মাঠে দেখিয়েছেন, তার ফল গুরুতর হওয়ার কথা। এখানেই থামেননি ভারত অধিনায়ক। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যেকোনো প্রশ্নের উত্তরেই তিনি টেনে এনেছেন আম্পায়ারিং প্রসঙ্গ, ‘আমার মনে হয় এখান থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।
বিশেষ করে ক্রিকেটের বাইরে, যে ধরনের আম্পায়ারিং হয়েছে এখানে, আমরা খুবই অবাক। পরেরবার বাংলাদেশে আসার আগে আমরা এই মানের আম্পায়ারিংয়ের ব্যাপারে প্রস্তুতি নিয়ে আসব।’ বাংলাদেশের ব্যাটিং প্রসঙ্গে এক লাইনে প্রশংসা বরাদ্দ করার পর আবার আম্পায়ারিং নিয়ে বিষোদগার করেন হারমানপ্রীত, ‘আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু আগেও বলেছি, কিছু নিম্নমানের আম্পায়ারিং সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেসব সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা খুবই হতাশ।
’
অনুষ্ঠান সঞ্চালকের তৃতীয় প্রশ্নে জানা গেল হারমানপ্রীতের অসন্তুষ্টির আরেকটি কারণ, ‘সব শেষে বলব যে আমাদের রাষ্ট্রদূত এখানে এসেছেন। আশা করেছিলাম, আপনারা হয়তো তাঁকে এখানে (পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে) ডাকবেন।’ মাঠে উপস্থিত রাষ্ট্রদূতদের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে স্থান দেওয়ার কোনো নিয়ম আইসিসির নির্দেশনায় নেই। তবে সৌজন্যের খাতিরে ভরা মঞ্চে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে জায়গা দিতেও পারত সিরিজের আয়োজক বিসিবি। ব্যস, এটুকুই। কিন্তু আম্পায়ারিং নিয়ে যে বিস্ফোরক আচরণ এবং মন্তব্য করেছেন হারমানপ্রীত কৌর, তা ক্রিকেট আইন এবং শিষ্টাচারের পরিপন্থী। ভারতের পুরুষ দলের কোনো অধিনায়ককেও এতটা ‘আগ্রাসী’ আচরণ করতে দেখা যায়নি। ভারতের বিপক্ষে ইমার্জিং এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে আম্পায়ারের কিছু সিদ্ধান্ত মনঃপূত হয়নি বাংলাদেশ দলের। সেসব নিয়ে কলম্বোয় দলের সঙ্গে সফরকারী নির্বাচক হাবিবুল বাশার আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে কূটনীতির পথে হেঁটেছিলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, কী হয়েছে।’ সাধারণত আনুষ্ঠানিকভাবে এমন প্রতিক্রিয়াই দেখানো হয়। কিন্তু হারমানপ্রীত কৌর কূটনীতি কিংবা সৌজন্যের ধার ধারেননি। মাঠে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার পর ম্যাচ শেষে মাইক্রোফোনেও আম্পায়ারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এখন দেখার পালা, এই প্রতিক্রিয়ার ‘দক্ষিণা’ হিসেবে আইসিসির তরফ থেকে কী শাস্তি হয় ভারতীয় অধিনায়কের।