দেশের তথ্য ডেস্ক ঢাকা প্রতিনিধি :- দৈনিক চারশো টাকা মজুরি ভিত্তিতে কাজ, নেই কোনো ছুটি। বলছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক মুজুরি ভিত্তিতে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীদের কথা। চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আজ বুধবার (১৯ জুলাই) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায় তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন তারা। জানিয়েছেন দাবি না মানা পর্যন্ত চলবে অবস্থান ধর্মঘট।
তাদের এক দফা দাবি হচ্ছে- চাকরি স্থায়ীকরণ করা। একাধিক অস্থায়ী কর্মচারী জানান, হয় মৃত্যু নয়তো চাকরি। দাবি না মানা পর্যন্ত ধর্মঘট অবস্থান থেকে তারা উঠছেন না।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪২ জন অস্থায়ী কর্মচারী আছেন।
যাদের দৈনিক ৪০০ টাকা হারে মজুরি দেওয়া হয়। যা বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী খুবই স্বল্প। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান তারা। শুধু তাই নয় তাদের নেই কোনো ছুটি।
একদিন ছুটিতে গেলে ওইদিন আর কোন টাকা পান না।
একাধিক অস্থায়ী কর্মচারী কালের কণ্ঠকে জানান, চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ২০২১ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনবার প্রশাসনকে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন এবং একই দাবিতে মানববন্ধন করা হলে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার অস্থায়ী কর্মচারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২ জানুয়ারি চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন তারা। তখন প্রশাসনের আশ্বাস ছিলো ৬ মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও অফিসসমূহে নিয়োগ দেওয়া হবে। মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে অনশন স্থগিত করেন তারা।
তবে আশ্বাসের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও তার বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবারও অবস্থান ধর্মঘটে বসেছেন তারা।
কর্মচারীরা আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন হল এবং কিছু বিভাগে নতুন করে ৪১ জন কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে একজনও দৈনিক মুজুরি ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীদের মধ্যে থেকে নয়।
শারীরিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক শিরিন আক্তার বলেন, ‘৫ বছর ধরে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করছি। আশ্বাসে আশ্বাসে কেটেছে এতগুলো বছর। কিন্তু চাকরি স্থায়ী হচ্ছে না। এখন আমাদের একটাই দাবি চাকরি স্থায়ীকরণ। হয় চাকরি, নয়তো মৃত্যু। এখান থেকে আমরা দাবি না মানা পর্যন্ত উঠছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ইউজিসির অনুমোদন সাপেক্ষে দৈনিক মজুরিতে কর্মরত ব্যক্তিদের ধাপে ধাপে স্থায়ী করার প্রক্রিয়া চলছে।’
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।