দূরে থাকবে বার্ধক্য, বয়স কমানোর ওষুধ আবিষ্কার

Medicine.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক :- আমরা সবাই চাই আজীবন যৌবন ধরে রাখতে। চেহারার ভিতরে তারুণ্য ধরে রাখতে। কিন্তু বাস্তবে কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। বার্ধক্য আসেই। সেই সঙ্গে মুখে পড়ে বলিরেখা। বয়সের চাপে ত্বক হয় শিথিল। বয়সের কাছে পার পায় না কেউই, অন্তত বিজ্ঞান তাই বলে। কিন্তু বিজ্ঞানের পরিধি যে আদতেই অসীম, তা প্রমাণ করতে বিজ্ঞানই যেন বারবার বিজ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করে। এই যেমন বয়সের অঙ্কেও তাই! হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক দাবি করেছেন, তাদের আবিষ্কার করা ‘ওষুধ’ বয়স কমানোর মোক্ষম অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।

মানুষের শরীরে বয়সের ছাপকে ঠেকিয়ে দিতে পারে। ফলে বয়সে বৃদ্ধ হলেও দেখাবে যুবকের মতো। নিউইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। সম্প্রতি এজিং জার্নালে ‘কেমিক্যালি ইনডিউসড রিপ্রোগ্রামিং টু রিভার্স সেলুলার এজিং’ নামের একটি সমীক্ষা প্রকাশিত হয়।

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই নানা রকমের ওষুধবিষুধ নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছিল এই গবেষকের দল। শেষে এসেছে সাফল্য। তারা দাবি করেছেন, ট্রায়ালের মাধ্যমে তারা প্রমাণ পেয়েছেন, এই ওষুধ খেলেই মানবদেহের বার্ধক্যজনিত সমস্যা কমে গিয়ে বয়স উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করবে।

এতদিন অবশ্য বয়স কমানোর জন্য ‘জিন থেরাপি’ বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত ছিল বিজ্ঞানী মহল। কিন্তু তা দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ, খরচসাপেক্ষ এবং ঝুঁকিসাপেক্ষ একটা পদ্ধতি। তা দিয়ে বয়সকে খানিকটা বেঁধে রাখা যেত বটে। তবে কেমিক্যাল ককটেলের তৈরি ওষুধ টপ করে মুখে ফেললেই বয়স কমে যাবে, এমনটা যেন অবিশ্বাস্য!

প্রাথমিক ভাবে হার্ভার্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট পাঁচ থেকে সাতটি ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে এই ককটেলে। এই ওষুধগুলি এমনিতে বয়স্ক মানুষদের শারীরিক ও মানসিক নানা রোগের প্রতিকার চিকিৎসায় আলাদাভাবে ব্যবহার করা হয়। তবে সব ওষুধকে একসঙ্গে মিলিয়ে আশ্চর্য ফল পেয়েছেন হার্ভার্ডের গবেষকরা!

বহু ট্রায়াল ও এরর চলেছে তিন বছর ধরে। মূলত সেই অণু তৈরির কাজ করা হচ্ছিল, যা কোষের বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বাধা দিয়ে ত্বকে যৌবনের জেল্লাকে ফিরিয়ে আনতে পারে। অবশেষে মিলেছে সবুজ সঙ্কেত। এর পরে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, দেহের কোন অঙ্গে কীভাবে এই ওষুধ প্রয়োগ করলে ফল মিলবে, তা খুঁজে বের করা। সব দেখেশুনে তাঁরা জানিয়েছেন, স্নায়ু, মস্তিষ্ক, কিডনি ও মাংসপেশিতেই কাজ করবে এই কেমিক্যাল ককটেল ওষুধ।

এই ওষুধের ট্রায়াল আপাতত কেবল ইঁদুর ও বাঁদরের উপরেই হয়েছে। তাতে আশ্চর্য সুফল মিলেছে বলে দাবি ওই গবেষকদের। তাদের দৃষ্টিশক্তি ও আয়ু দুইই বেড়েছে। তবে এখনও মানবদেহে এই ওষুধ পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। এই পরীক্ষা নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন ও সংশয় রয়েছে। তবে আগামী বছরেই মানবদেহে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে।

হার্ভার্ড গবেষক ডেভিড সিনক্লেয়ারও টুইটার ও থ্রেডে একই ব্যাখ্যা দিয়ে লিখেছেন, আমাদের সাম্প্রতিক গবেষণা শেয়ার করতে পেরে কৃতজ্ঞ। আমরা আগে দেখিয়েছি যে ভ্রূণের জিন চালু করতে জিন থেরাপি ব্যবহার করে বয়সের পরিবর্তন সম্ভব। এখন আমরা ‘রাসায়নিক ককটেল’ দিয়ে সেটি সম্ভব করে দেখালাম। সাশ্রয়ী মূল্যে পুনর্জীবন লাভে এটি আরেক পদক্ষেপ।

Share this post

PinIt
scroll to top