দেশের তথ্য ডেস্ক:- বাংলাদেশ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জোরালো পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র উন্মুখ বলে জানিয়েছেন দেশটির বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে শুক্রবার রাতে বাংলায় দেয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘দেখা হবে, ঢাকা! একটি ফলপ্রসূ ও উৎসাহব্যাঞ্জক সফরের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাবৃন্দ, সুশীল সমাজ, রাষ্ট্রদূত হাস এবং আমাদের নিবেদিত ঢাকাস্থ দূতাবাস টিমকে ধন্যবাদ।
‘অবাধ ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য জোরালো পদক্ষেপ, শ্রম অধিকার এবং রোহিঙ্গাদের সহায়তাসহ বাংলাদেশি অংশীদারদের সাথে সমন্বয় অব্যাহত রাখতে আমরা উন্মুখ।’
এদিকে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের শুক্রবারের এক বার্তায় বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা ও কক্সবাজারে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজের সদস্য, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং মানবিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে ১১ থেকে ১৪ জুলাই বাংলাদেশ সফর শেষ করেছেন।
‘বাংলাদেশ সফরকালে আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ ছাড়াও তিনি শ্রমিক আন্দোলন-কর্মী, নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের সাথে বৈঠক করেছেন।’
এতে বলা হয়, ‘এসব বৈঠকে আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া বাংলাদেশের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়ার পাশাপাশি নাগরিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, মানবাধিকার রক্ষাকর্মী, সাংবাদিক ও শ্রমিক আন্দোলন কর্মীদের নিরাপত্তার গুরুত্ব, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা থাকা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন ও সেখানকার ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন।
‘সেই সময়ে তিনি রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বার্মা (মিয়ানমার) এবং বাংলাদেশের উদ্যোগগুলোর সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও ৭৪০ কোটি টাকারও বেশি (৭৪ মিলিয়ন ডলার) অনুদানের ঘোষণা করেছেন, যার মধ্যে প্রায় ৬১০ কোটি টাকা বার্মায় অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী ও অন্যান্যদের সহায়তার জন্য দেয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে ২০১৭ সাল থেকে এই অঞ্চলে রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীর জন্য আমেরিকার সহায়তার পরিমাণ ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল।’
বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ‘…আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া ফ্রিডম ফান্ড এবং এর অংশীদারদের জন্য স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ১০ কোটি টাকারও বেশি (১ মিলিয়ন ডলার) অনুদান ঘোষণা করেন। এই টাকা মানব পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ৫০০-এরও বেশি শিশুকে সমাজে পুনঃএকত্রীকরণের কর্মসূচিতে ব্যবহার করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র মানব পাচারের অভিশাপ মোকাবিলায় সরকার এবং নাগরিক সমাজের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নিবেদিতভাবে কাজ করছে।’
আন্ডার সেক্রেটারি জেয়াকে উদ্ধৃত করে বার্তায় বলা হয়, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং গণতন্ত্র সমুন্নত রাখা ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান বজায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।