দেশের তথ্য ডেস্ক: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় এই বছরের রেকর্ড সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, যাদের নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৮২০ জন হাসপাতালে গেছেন। তার মধ্যে ৬০৩ জনই ঢাকায় এবং ২১৭ জন ঢাকার বাইরের। এ নিয়ে চলতি বছর এপর্যন্ত ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২ হাজার ১১৮ জনে।এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত একদিনে দুজন মারা গেছে। তাদের নিয়ে ডেঙ্গুতে এ বছর মৃত্যু হল ৬৭ জনের।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, জুলাই মাসের প্রথম ছয় দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়া জুলাইয়ে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।শুক্রবার দেশের অনেক হাসপাতাল ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তথ্য দেয়নি। দুইদিনের তথ্য যোগ করে শনিবার নতুন আক্রান্তদের তথ্য প্রকাশ করেছে অধিদপ্তর।এবার বর্ষা মওসুম শুরুর আগে থেকেই এইডিস মশাবাহিত এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। গত রোববার দেশে ৫০৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, যা এ বছরের সর্বোচ্চ।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২ হাজার ৫০২ জন রোগী। এদের মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৭৭৩ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৭২৯ জন। মাসের হিসাবে জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১ হাজার ৩৬ জন এবং জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন এবং জুন মাসে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ‘ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে’ ভুগছিলেন এবং ‘শক সিনড্রোমে’ মারা গেছেন।
এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রেকর্ড ২৮১ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশে এক লাখেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ যাবৎকালের সর্বাধিক। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের। এ বছর এইডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বর্ষা পূববর্তী জরিপের তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ঢাকার ১১৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৫টিতে ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এইডিস মশার ঝুকিপূর্ণ উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় ঢাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
এইডিস মশার উপস্থিতির চিত্র শনিবার ঢাকা উত্তর সিটির এক অভিযানেও বেশ টের পাওয়া গেছে। এদিন মেয়র আতিকুল ইসলাম মোহাম্মদপুর এলাকার ছয়টি বাড়ি পরিদর্শন করেন। এর মধ্যে পাঁচটি বাড়ির নিচতলায় জমে থাকা পানিতে এইডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়।#