পাহাড়সম রানের টার্গেট দিয়ে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ

image-686775-1686925679.jpg

মিরপুর টেস্টে ৬৬২ রানের পাহাড়সম রানের লক্ষ্য আফগানিস্তানের সামনে। টেস্ট ক্রিকেটের পঞ্চম সর্বোচ্চ লক্ষ্যও একটি। এই রান তাড়া করে জেতা, একরকম দুঃস্বপ্নই হতে পারে আফগানদের জন্য। সফরকারীদের রানে চাপায় ফেলার পর শেষ বিকেলে বুনো উল্লাসে মাতেন বাংলাদেশের পেস বোলাররাও।

Advertisement

২৬ রানেই আফগানিস্তানের দুই ব্যাটারকে ড্রেসিংরুমে পাঠিয়েছেন শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ। তবে আর বিপর্যয় না ঘটিয়ে ৪৫ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে আফগানরা। আরও কিছুক্ষণ খেলার সুযোগ ছিল। কিন্তু আলোক স্বল্পতার কারণে প্রায় আধা ঘণ্টা আগেই খেলা শেষ করতে বাধ্য হন আম্পায়াররা।

ছন্দে থাকা ইবরাহিম জাদরান মিরপুর টেস্টে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও হলেন ব্যর্থ। আগের ইনিংসে ৬ রান করলেও এবার গোল্ডেন ডাকেই ফিরলেন। ইনিংসের প্রথম বলেই দারুণ এক ডেলিভারিতে তাকে ফেরান শরিফুল। ব্যাট হাসেনি আরেক ওপেনার আব্দুল মালিকেরও। ৫ রানে তাসকিন আহমেদের বলে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

ব্যাটিংয়ে নেমে তাসকিনের বলে মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক হাসতমউল্লাহ শহীদি। তবে সুস্থ থাকলে কাল আবারও নামার সুযোগ আছে তার। ১৩ রান করে অবসরে যান তিনি। রহমত শাহ ১০ ও নাসির জামাল ৫ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন।

এর আগে দুই বছর পর সেঞ্চুরি পেলেন মুমিনুল হক। নাজমুল হোসেন শান্ত করেছেন ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। প্রথম ইনিংসে ২৩৬ রানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ৪২৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করল। দুই মিলিয়ে বাংলাদেশ লিড পেল ৬৬১ রানের। এর আগে টেস্ট ক্রিকেটে এত বড় লিড পায়নি তারা।

আজ তৃতীয় দিনে দ্বিতীয় সেশন শেষেই হয়তো ইনিংস ঘোষণা দিত বাংলাদেশ। কিন্তু মুমিনুল হক ও লিটন দাসের জন্যই হয়তো সেটি সম্ভব হয়নি। ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলেন মুমিনুল ও ২ রানের জন্য ফিফটির অপেক্ষায় ছিলেন লিটন। চা বিরতি থেকে ফিরেই তৃতীয় সেশনের শুরুতে প্রায় দুই বছর পর সেঞ্চুরির দেখা পান মুমিনুল। লিটনও তুলে নেন ফিফটি।

একটু পরই ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৬৬২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে আফগানিস্তানকে। এর আগে ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়েকে হারারেতে ৪৭৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেটাই ছিল এত দিন সর্বোচ্চ লক্ষ্য দেওয়ার রেকর্ড। এবার সেটিকে পেছনে ফেলে নতুন রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ।

তপ্ত রোদে তৃপ্তির ঢেকুর তোলার কোনো সুযোগ নেই আফগানিস্তানের বোলারদের। ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় শুধু বলই করেছেন, কিন্তু ঘামের মূল্যে খেয়েছেন শুধু বাংলাদেশ ব্যাটারদের পিটুনি। ৫.৩১ হারে রান দিয়ে নিতে পেরেছেন মাত্র ৪ উইকেট, আজ নিয়েছেন তিনটি।

প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত দ্বিতীয় ইনিংসেও করেছেন সেঞ্চুরি। ১৫১ বলে খেলেছেন ১২৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। ৭১ রানে আউট হন জাকির হাসান। মুশফিকুর রহিম রিভার্স সুইপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৮ রানে। এরপর মুমিনুল ১২১ ও লিটন ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

এই টেস্টে বাংলাদেশ শুধু নিজেদের রেকর্ডই ভাঙেনি, জায়গা করে নিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়েও। টেস্টে ৬১৪ রান ইতিমধ্যে লক্ষ্যে দেওয়ার ক্ষেত্রে পঞ্চম স্থানে নাম লিখিয়েছে। ১৯৩০ সালে কিংস্টোনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সর্বোচ্চ ৮৩৬ রানের লক্ষ্য দেয় ইংল্যান্ড। ১৯৬৯ সালে সিডনিতে উইন্ডিজদের ৭৩৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

১৯৩৯ সালে ডারবানে ইংল্যান্ডকে ৬৯৬ রানের লক্ষ্য দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ২০০৬ সালে ব্রিসবেনে ইংলিশদের ৬৪৮ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য দিয়েছিল অজিরা। ২০২৩ সালে আফগানিস্তানকে মিরপুরে বাংলাদেশ লক্ষ্য দিল ৬৬২ রানের।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top